সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি ডাল আটা ময়দা
মাসুদ মিয়া: রাজধানীসহ সারাদেশে শীতের সবজি ভরপুর থাকায় অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। সবজির দাম কমায় ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। আলু ও ডিমের দাম কমলেও পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এেিদকে বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে চিনির দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া বাড়তি দামে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, মসলাসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে বাজারে নিম্নমুখী আছে মুরগি দাম। সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি পুরান আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা। এছাড়া শিম ৪০- ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, ফুলকপি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, পেঁপে কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি।
এছাড়া কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, মুলা ৩০ টাকা কেজি, লাউ ৪০-৫০ (পিস) টাকা, শসা ৪০ টাকা, তবে বেড়েছে টমেটোর দাম কেজি বিক্র হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা।
টমেটোর দাম প্রসঙ্গে মতিঝিল কলোনী বাজারের সবজি বিক্রতারা বলেন, টমেটো অধিকংিশ সবজির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণেই আছে। তবে টমেটোর দামটা একটু বেশি।
সবজির দাম প্রসঙ্গে কলতা বাজারের সবজি বিক্রেতা সাদ্দাম বলেন, শীতের সবজি ভরপুর থাকায় দাম কমেছে। সামনে আরো কমবে
এদিকে খোলা বাজারে খোলা সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেজাত সাদা চিনি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। এসব চিনির দাম কয়েক সপ্তাহ আগে ১৪০ টাকার মধ্যে ছিল।
পাঁচভাই ঘাটলেন ব্যবসায়ী নাজমুল বলেন, কোম্পানিরা চিনি দিচ্ছে না। তারাই সংকট লাগিয়ে রেখে দাম বাড়াচ্ছে।
এদিকে, মুদি দোকানে চলতি মাসের শুরুতে মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছিল। মাঝে কয়েক দিন কমে আবার বেড়েছে এখন। বর্তমানে মোটা দানার ডালের কেজি ১১০ থেকে ১২০ এবং ছোট দানার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খোলা আটা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা আর খোলা ময়দা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ টাকা বেশি। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।পাশাপাশি মানভেদে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, আমদানি রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আমদানি করা আদা ২২০ বিক্রি হচ্ছে।
মসলা জাতীয় পণ্য বিক্রেতারা বলেন, আদা রসুনের দাম বেড়েছে। তবে পেঁয়াজ আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন থেকে মাছের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে। বাজারে ৬০০ বা ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে হাজার টাকায়। ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের ইলিশের কেজি এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে রুই-কাতলার কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর তেলাপিয়া, পাঙাশের কেজি ২২০ থেকে আড়াইশ টাকা। বাজারভেদে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০-১৯০ টাকা।
এছাড়া মানভেদে বিআর আটাশের চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, মানভেদে মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চালের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে ব্যবসায়ীরা বলেন, বিআর আটাশ চালের দাম কেজিতে ২ টাকা থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। নাজিরেও বাড়ছে ২ টাকা আর মিনিকেটে বাড়ছে দুই টাকা।
এদিকে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। ক্রেতারা বলেন, সবজি বাদে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যেম আয়ের মানুষদের। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। নিত্যপণ্যের বাজার সকালে এক রকম- বিকেলে আরেক রকম পরের দিন আরেক রকম। যেসব পণ্যের দাম বাড়ার কথা নয়, সেইসব পণ্যেরও দাম বাড়ছে যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ ছাড়াই। ফলে বাজারে গিয়ে পছন্দের পণ্যই চাহিদামতো কিনতে পারছেন না অনেকেই। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি রাখতে গিয়ে জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না কিনেই ঘরে ফিরছেন। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারকে আরো কঠোর আইন করতে হবে।