শিক্ষিত লোকের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৭ লাখ
এস.ইসলাম জয় : [১] দেশে মূলধারা বা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১০ কোটি ৫৭ লাখ ৭৬ হাজার ৩৬৫ জন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
[২] সংস্থাটি বলছে, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৭ জন, ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ৮৫ লাখ ২১ হাজার ৬৫৭ জন। এছাড়া অন্যান্য (ইংরেজি মাধ্যম) শিক্ষায় শিক্ষিত ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৭১৪ জন।
[৩] গতকাল মঙ্গলবার পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতাধীন বিবিএস বাস্তবায়িত দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর ন্যাশনাল রিপোর্ট প্রকাশ করে। পরিসংখ্যান ভবনের মিলনায়তন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন।
[৪] বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ. মান্নান। এসময় তিনি বলেন, জনশুমারি করার ব্যবধান ১০ বছর থেকে কমিয়ে আনা উচিত। রিয়েল টাইম জনশুমারি হওয়া দরকার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া দরকার বলেও মনে করেন তিনি। সেইসাথে প্রতিটি কাজে অপচয় কমিয়ে আনার তাগিদ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
[৫] প্রকশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) মোসাম্মাৎ নাসিমা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য সচিব ড. মো. কাউসার আহম্মদ।
[৬] বিবিএসের তথ্যমতে, ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনসংখ্যার মধ্যে পল্লি অঞ্চলে বসবাস করেন ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৪ জন এবং শহরে বসবাস ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন।
[৭] জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী মানুষদের মধ্যে ১৯৮১ সালের আদম শুমারিতে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ছিলো ৯৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। কিন্তু ২০২২ সালের জনশুমারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ ৪১ বছরের ব্যবধানে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠী কমেছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে, ১৯৮১ সালে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর হার ছিলো ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০২২ সাল শেষে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশে।
[৮] বিবিএসের তথ্য বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২২ সাল শেষে সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ১৯৭৪ সালের শুমারিতে যা ছিলো ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে এমন জনগোষ্ঠী ছিলো ৭৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশে।
[৯] শুমারির তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া নাগরিক রয়েছে ২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ, নবম বা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে ৭ শতাংশ নাগরিক। তাছাড়া এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস করা নাগরিক রয়েছে ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস করা রয়েছে ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ।
[১০] এছাড়া বিবিএসের হিসাব বলছে, দেশে স্নাতক বা সমমান পাস করা নাগরিক ২০২২ সাল শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। অথচ আগের শুমারিতেও এ হার ছিলো মাত্র ১ দশমিক ৯২ শতাংশ। দেশে বর্তমানে স্নাতকোত্তর বা সমমানের পাস করা নাগরিক রয়েছে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিক রয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।