দেশে বন্ধ হলো নোকিয়ার কারখানা
অর্থনীতি ডেস্ক : [১] দেশের বাজারে মেইড ইন বাংলাদেশ নামে নোকিয়া ফোন আর পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় অংশীদারের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে দেশে থাকা একমাত্র কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এটি আদৌ আর চালু হবে কি না, তা বলতে পারছে না বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
[২] নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবাল ও দেশীয় অংশীদার ইউনিয়ন টেক পার্ক লিমিটেডের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব।
[৩] নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবাল ও দেশীয় অংশীদার ইউনিয়ন টেক পার্ক লিমিটেডের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব।
[৪] ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে প্রথম বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড হিসেবে স্মার্টফোন সংযোজন শুরু করে নোকিয়া। সে সময়ে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা হ্যান্ডসেট রপ্তানির কথাও জানিয়েছিল ব্র্যান্ডটি। অথচ বাণিজ্যিক যাত্রা শুরুর মাত্র দেড় বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে গেছে কারখানাটি।
[৫] এর নৈপথ্যে উঠে এসেছে নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবাল ও দেশীয় অংশীদার ইউনিয়ন টেক পার্ক লিমিটেডের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব। এরই জেরে চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) চিঠি দেয় ইউনিয়ন টেক পার্ক।
[৬] চিঠিতে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কারণ দেখিয়ে ইউনিয়ন টেক পার্ক লিমিটেডকে হ্যান্ডসেট উৎপাদনের কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে এইচএমডি। একই সঙ্গে তারা দীর্ঘদিনের বকেয়াও পরিশোধ করেনি।
[৭] সবমিলিয়ে কারখানার বিনিয়োগ বাদেই এইচএমডি গ্লোবালের কাছে প্রায় ৪৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ইউনিয়ন টেক পার্ক।
[৮] অথচ ৩১ আগস্ট বিটিআরসিতে এক সভায় ইউনিয়ন টেক পার্ক লিমিটেডকে বাদ দিয়ে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে পার্টনার হিসেবে চূড়ান্ত করার কথা জানায় এইচএমডি গ্লোবাল। অথচ ইউনিয়ন টেক পার্কের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি ছিল চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
[৯] পার্টনার হিসেবে বাদ দেয়ার বিষয়টি নোকিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান গোপন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে ইউনিয়ন গ্রুপ।
[১০] শুধু তাই নয় এইচএমডির ঢাকা অফিসের বিরুদ্ধে বাজারে নকল নোকিয়া হ্যান্ডসেট বাজারজাত এবং সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কথামতো কেনা এক লাখ ২০ হাজার পিস স্মার্টফোনে ত্রুটি ধরা পড়ায় ৫০ শতাংশ লোকসানের অভিযোগও তুলেছে ইউনিয়ন গ্রুপ। সবমিলিয়ে কারখানার বিনিয়োগ বাদেই এইচএমডি গ্লোবালের কাছে প্রায় ৪৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ইউনিয়ন টেক পার্ক।
[১১] জানতে সময় সংবাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে চিঠিতে উল্লেখ করা বক্তব্যের বাইরে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি ইউনিয়ন গ্রুপ।
[১২] এদিকে মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও ইউনিয়ন গ্রুপকে গোপনে বাদ দেয়ার বিষয়ে এইচএমডি গ্লোবালের ঢাকা অফিস বলছে, নিয়ম মেনে তিন মাসের নোটিশ দিয়ে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তবে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি কেউ।
[১৩] দুই প্রতিষ্ঠানের চলমান দ্বন্দে দেশে নোকিয়ার ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চায় না বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কিংবা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।