ঘুরে ফিরে একই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সেরা করদাতা সর্বোচ্চ করদাতাদের ৯০ শতাংশই উৎসে
বিশ্বজিৎ দত্ত : [১] টানা ৮ বার সেরা করদাতা ১৪ ব্যক্তি ও ১২ প্রতিষ্ঠান।
[২] জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ করদাতার স্বীকৃতি হিসেবে তিনটি আলাদা বিভাগে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘কর কার্ড’ দিয়েছে।
[৩] তাদের মধ্যে ১৪ ব্যক্তি ও ১২ প্রতিষ্ঠান ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে টানা আট বছর ধরে দেশের শীর্ষ করদাতা হিসেবে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
[৪] সাবেক কয়েকজন এনবিআর সদস্য প্রায় একই মত পোষণ করে বলেন, এটি একটি গতানুগতিক কাজ। লক্ষ্য করলেই দেখবেন এখানে যারা পুরস্কার পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই উৎস্যে কর দিয়েছেন। যেমন তিতাস গ্যাস বা কাউস মিয়া। কাউস মিয়া জর্দার ব্যবসা করেন। বা বৃটিশ আমেরিকান ট্যবাকো। বা গ্রামীণ ফোন। এগুলোর করের তেমন কোন পরিবর্তন নেই। এই কোম্পানিগুলোও স্বচ্ছ। কাজেই এরাই সর্বোচ্চ করদাতা হন। কর বিভাগের বিশেষ কোন উদ্যোগের প্রয়োজন পরে না। দেশে এখন অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে যারা অনেক আয় করে। কিন্তু কর দেয়না। এগুলো যদি সঠিক কর দেয় বা কর আদায় করা যায় তবে কর তো বাড়বেই সর্বোচ্চ করদাতাও অনেক পাওয়া যাবে। তালিকায় ১৪ ব্যক্তির মধ্যে আছেন হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী কাউস মিয়া, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত।
[৫] অন্যরা হলেন ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের খাজা তাজমহল, সার্ভিসহোল্ডার এম এ হায়দার হোসেন, মোহাম্মদ ইউসুফ, হোসনে আরা হোসেন, রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন ও লায়লা হোসেন, পালমাল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাফিস শিকদার ও ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। এ ছাড়াও, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেক গত আট বছরে সাতবারের মতো ‘কর কার্ড’র জন্য মনোনীত হয়েছেন।
[৬] গত ৩০ নভেম্বর ২০২২-২৩ অর্থবছরের সর্বোচ্চ করদাতার স্বীকৃতি পাওয়া ৭৬ ব্যক্তি, ৫৪ প্রতিষ্ঠানসহ আরও ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে গেজেট প্রকাশ করে এনবিআর। আগামী ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদেরকে কর কার্ড, ক্রেস্ট ও সম্মাননা দেওয়া হবে।
[৭] এনবিআর গত এক দশকেরও বেশি আগে কর কার্ড চালু করে এবং বেশ কয়েকটি খাত ও পেশার করদাতাদের স্বীকৃতি দিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে এই তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
[৮] প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, গ্রামীণফোন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ ও কোটস বাংলাদেশ। এ তালিকায় আরও আছে মিডিয়াস্টার লিমিটেড, আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বাদশা টেক্সটাইল মিলস, রিফাত গার্মেন্টস ও এসএন করপোরেশন।
[৯] এ ছাড়াও, এইচএসবিসি, নেসলে বাংলাদেশ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, এপেক্স ফুটওয়্যার, ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড, নোমান টেরি টাওয়েল মিলস ও এএসবিএস ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত টানা ছয়বারের মতো পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে নেসলে, ইউনিলিভার ও অ্যাপেক্স আট বছরের মধ্যে সাতবারের মতো এই স্বীকৃতি পেল। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, বে ডেভেলপমেন্টস লিমিটেড, বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও লালমাই ফুটওয়্যার ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচবারের মতো এই পুরস্কার পেল।