আইএমএফ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের প্রস্তাব আজ ওঠছে বোর্ড সভায়
সোহেল রহমান : [১] আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে বাংলাদেশের গৃহীতব্য ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার সংস্থার বোর্ড সভায় ওঠছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করা হবে। দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। এর আগে চলতি পঞ্জিকা বছরের গত ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। [২] প্রসঙ্গত: চলতি পঞ্জিকা বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় আইএমএফের পর্ষদ। সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে এ ঋণ পাওয়ার কথা রয়েছে। ঋণের গড় সুদের হার ২ দশমিক ২ শতাংশ।
[৩] এদিকে আইএমএফ-এর বোর্ড সভায় বাংলাদেশের ঋণ প্রস্তাবের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কারও ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের প্রস্তাব ওঠছে বলে জানা গেছে।
[৪] অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আলোচ্য প্যাকেজে দুই ধরনের ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল (ইসিএফ অ্যান্ড ইএফএফ) থেকে পাওয়া যাবে ৩৩০ কোটি ডলার। রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাওয়া যাবে ১৪০ কোটি ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের শর্ত পরিপালন ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। [৫] জানা যায়, ঋণ পাওয়ার জন্য আইএমএফ বাংলাদেশ-কে কোয়ান্টিটেটিভ পারফরম্যান্স ক্রাইটেরিয়া (কিউপিসি) বা পরিমাণগত কর্মসক্ষমতার মানদণ্ড, ইন্ডিকেটিভ টার্গেটস (আইটি) বা নির্দেশক লক্ষ্য এবং স্ট্রাকচারাল বেঞ্চমার্ক (এসবি) বা কাঠামোগত মাপকাঠি পূরণের শর্ত দিয়েছে। এর মধ্যে নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর), প্রাইমারি ব্যালান্স ও এক্সটার্নাল পেমেন্টস এরিয়ার্স সংক্রান্ত শর্তগুলো কিউপিসি’র আওতাভুক্ত।
[৬] সূত্রমতে, নিট রিজার্ভ-সংক্রান্ত শর্ত এখনো পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। নির্দেশক হিসেবে কর রাজস্ব, সামাজিক খাতে সরকারের ব্যয় ও সরকারের মূলধনি বিনিয়োগসংক্রান্ত কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল আইএমএফ। অন্যদিকে লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাজস্বও আহরণ করতে পারেনি এনবিআর।
[৭] আইএমএফের শর্তে গত জুনের মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভের হিসাবায়ন, বাজারভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রার দর নির্ধারণ, ব্যাংকের পাইলট রিস্কভিত্তিক নজরদারির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের তথ্য প্রকাশের কথা বলা হয়েছিল। এছাড়া জুলাইয়ের মধ্যে সুদহারে করিডোর পদ্ধতি গ্রহণেরও শর্ত দিয়েছিল সংস্থাটি।