শেয়ারবাজারে সামান্য পতন হলেও ডিএসইর লেনদেন ৬০০ কোটি টাকার উপরে
মাসুদ মিয়া: [১]দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবস বড় উত্থান হলেও গতকাল মঙ্গলবার সামান্য পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে সূচক সামান্য কমলেও লেনদেন ৬০০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। [২]আগের দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল বড় উত্থানের মেজাজ নিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছিল। কিন্তু দিনের মধ্যভাগে মুনাফা তোলার চাপে বড় উত্থান থেমে যায়। বাজার ধীরে ধীরে নিম্নমুখী ধাবিত হয়। তবে শেষবেলায় বড় বিনিয়োগকারীদের তৎপরতায় বাজারে বড় পতন হয়নি। বাজার বিশ্লেষনে দেখা যায়, গত ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের বড় পতনে ডিএসইর সুচক খোয়া গিয়েছিল ৩১ পয়েন্ট। তারপর বাজার উত্থানের ধারাবাহিকতায় ফেরে। এরপর টানা সাত কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক বাড়ে ৬২ পয়েন্ট। এরমধ্যে সোমবার বাজারে বড় উত্থান হয়। এদিন সূচক বাড়ে ১৩ পয়েন্টের বেশি।
[৩]এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা শুরু হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারেও মন্দা প্রবণতা দেখা দেয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে টানা চার সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকে শেয়ারবাজার। তবে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজার ছিল বেশি ইতিবাচক। ফলে মূল্যসূচক ও বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, এর আগে টানা সাত কর্মদিবস উত্থান প্রবণতায় থাকে। ফলে যেসব বিনিয়োগকারীা যেসব শেয়ারে মুনাফায় রয়েছেন, তারা সেসব শেয়ারে মুনাফা তুলতে চান। ফলে বাজার কিছুটা সেল প্রেসারের ধাক্কা লাগে। যার ফলে বড় উত্থান ধীরে ধীরে পতনের ধারায় ধাবিত হয়। তবে শেষভাগে বড় বিনিয়োগকারীরা বাই মুডে অগ্রসর হলে বাজার ফের উত্থানের পথে হাঁটতে থাকে। কিন্তু শেষবেলার অ্যাডজাস্টমেন্টের চাপে সেই উত্থানও তেমন টিকতে পারেনি।
[৪]গতকাল ডিএসইতে ৩৪৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ৮৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮৫টির।
ডিএসইতে ৬০১ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন থেকে ৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। আগের দিন ডিএসইতে ৫৯১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ০.৪৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৬৩ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ০. ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১১০ পয়েন্টে।
[৫]লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-সেন্ট্রালফার্মা, অলিম্পিক এক্সেসোরিজ, ফু-ওয়াংসিরামিক, এডভেন্ট ফার্মা, প্যাসিফিক ডেনিমস, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, খুলনা প্রিন্টিং, ডোমিনেজ স্টীল, সী পার্ল বীচ ওইয়াকিনপলিমার।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো: স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, আনলিমাইয়ার্ন, জিকিউ বলপেন, অলিম্পিক এক্সেসোরিজ, ওয়েস্টার্ন মেরিনশিপইয়ার্ড, আজিজ পাইপস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, প্যসিফিক ডেনিমস, লিব্রা ইনফিউশন ও ডোমিনেজ স্টীল।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-সী পার্লবীচ, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এসকেট্রিমস, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, এমারেল্ড অয়েল, সমতা লেদার ও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
[৬] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সিএসইতে ১৭১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ৫৪টির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৭১টি প্রতিষ্ঠানের।