আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি আগামী বছর জুনে, অর্থছাড়ে বাংলাদেশকে বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে
এস.ইসলাম জয় : [১] ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ তিনটি কর্মসূচির আওতায় পালন করার জন্য বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড় পেতে ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে। তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে আগামী জুন মাসে।
[২] এর আগে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যালোচনা করবে। তৃতীয় কিস্তির জন্য যেসব সংস্কার করতে হবে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে করছাড় কমানো, জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়, ভর্তুকি যৌক্তিক করার কৌশল নির্ধারণ এবং খেলাপি ঋণ কমানো।
[৪] প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড়ের পর্যালোচনা আগামী ডিসেম্বর মাসে। তখন রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদের তালিকা নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা, ব্যাংক খাতের তদারকিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতি সুদহারের কাঠামো ঠিক করা; রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ঝুকি কমানো এসব বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।
[৫] বাংলাদেশকে দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ মার্কিন ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণের অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে আসতে পারে।
[৬] ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ তিনটি কর্মসূচির আওতায় পালন করার জন্য বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। আইএমএফের ওই অর্থ পেতে ২০২৪ সালে বড় ধরনের বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থনীতিবিদদের মতে, আগামী ২০২৪ সালটি হতে হবে আইএমএফের সংস্কারের শর্ত পূরণে দৃশ্যমান উদ্যোগের বছর।
[৭] বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে বেশ কিছু বড় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। এই শর্ত পূরণ করতে না পারলে পরের পর্যালোচনায় পার পাওয়া কঠিন হবে। সামনে বাংলাদেশের জন্য অনেক কাজ আছে।
[৮] আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুন মাসের মধ্যে রাজস্ব, আর্থিক, জ্বালানি, সামাজিক নিরাপত্তা এই চারটি খাতেই দৃশ্যমান বড় সংস্কার করতে হবে। রাজস্ব খাতে সংস্কারের অন্যতম হলো আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং শুল্ক খাতে বছরের পর বছর যেসব কর ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা কমাতে হবে। ইতিমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এ লক্ষ্যে একটি দল কাজ করছে। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।