অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ডাল তেল আটা, ময়দা মাছের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে সবজি মুরগিও ডিম
মাসুদ মিয়া: মাছের দাম কিছুটা কমলেও শীতকালীন সবজিতে ভরপুর থাকার পরও দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দামও বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে আলুর দাম বেশি হওয়ার কারণে অন্যান্য সবজির উপরে কিছুটা চাপ পড়েছে। এখনো নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। অন্যান্য বছর এমন ভরা মৌসুমে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে নেমে আসে। এ কারণে মানুষ আলু কিনছে কম, অন্যান্য সবজির দিকে ঝুঁকছে। আবার কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়ার কারণ হিসেবে অবরোধে পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
এবিষয়ে শান্তিনগর বাজারের ক্রেতা মুনালিসা বলেন, আলু, পেঁয়াজ, ডিম এখনো বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। সরকার কোনো কিছুর দাম বাড়ালে দোকানিরা সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়িয়ে দেয়। তখন তারা চিন্তা করে না, পণ্যটি আগে কম দামে কেনা। আর সরকার কোনো পণ্যের দাম কমালে দোকানিরা সঙ্গে সঙ্গে দাম কমায় না। তখন তারা নানা ধরনের অজুহাত দেখায়। আসলে বেশি লাভের আশায় বিক্রেতারা বাজারে একধরনের অস্থিরতা তৈরি করে। আর বিড়ম্বনায় পড়ে ভোক্তারা। দাম কমলেও ভোক্তাকে বেশি টাকা দিয়েই পণ্য কিনতে হয়। অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে জানান এই ক্রেতা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকার মতো। গত সপ্তাহে শীতের সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, মুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হলেও এখন সে তুলনায় ১০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে সারা বছরের সবজি গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে এ বেগুনের দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেশি চড়েছে লাউয়ের দাম। প্রতিটি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে কেনা গেছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়
এছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়ে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দামে এখনো কোনো সুখবর নেই। বরং দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লেও গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ক্রেতাদের ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। আর দেশি পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার উপরে।
অন্যদিকে কিছুদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। যা এখন ২০০ টাকায় ঠেকেছে। একইভাবে বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম। আগে এ জাতের মুরগির কেজি পাওয়া যেতো ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ছিল ১৩০ টাকার ডজন। যা এখন ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা দরে।
মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জাকির নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, এ সময় পিকনিকসহ নানান অনুষ্ঠান হয় বিভিন্ন জায়গায়। হোটেলেও বিক্রি বেশি থাকে। এসব কারণে মুরগির চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। দামও বাড়তি। এদিকে রাজধানীতে প্রতি কেজি গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ টাকা নির্ধারণ দামে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীদের ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে মুদি বাজারে এখনো চিনির সংকট কাটেনি। প্রতি কেজি চিনি কিনতে হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ডাল তেল, আটা, ময়দার দাম।
এদিকে মাছের দাম কিছুটা কমেছে। চাষের পাঙাস-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম কমেছে। ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা আগের সপ্তাহ বাজারে প্রতি কেজি পাঙাস বিক্রি হতো ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, যা এখন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় ঠেকেছে। অন্যদিকে তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা আগের সপ্তাহ ছিল ২২০ টাকায়। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকায়। যা আগে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের রুইয়ের দাম প্রতি কেজি ২২০ থেকে ৩২০ টাকা গত সপ্তাহ ছিল ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। এদিকে ইলিশ মাছের দামও কমেছে এক কেজি আকারে মাছ কেজি বিক্র হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা মাঝারি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা ছোট আকারে কেজি ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা।