পাটপণ্য রপ্তানির প্রণোদনা সনদ ইস্যু ও প্রত্যয়ন বিজেজিইএ’র ওপর অর্পনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করার অনুরোধ
সোহেল রহমান : [১] দেশীয় পাটপণ্যের বৈচিত্রকরণ ও বৈচিত্রকৃত পাটপণ্য রপ্তানিতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে আসছে ‘বাংলাদেশ জুড গুডস এক্সপোর্টাস এসোসিয়েশন’ (বিজেজিইএ) এবং এর সদস্যভুক্ত পাটকলের উদ্যোক্তারা। এ প্রেক্ষাপটে বৈচিত্রকৃত পাটপণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে এ খাতে সরকার কর্তৃক প্রদেয় ২০ শতাংশ নগদ রপ্তানি প্রণোদনা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সনদ প্রদানের ক্ষমতা বিজেজিইএ’র ওপর পুনরায় ন্যস্ত করতে গত কয়েক বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন সংগঠনের নেতারা। বিষয়টি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে সম্প্রতি বিজেজিইএ’র পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।
[২] এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিজেইএ’র চেয়ারম্যান এস আহমেদ মজুমদার ‘আমাদের অর্থনীতি’-কে জানান, ‘আমরা শুধু বিজিজেইএ’র সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রণোদনা সনদ ইস্যু ও প্রত্যয়নের ক্ষমতা চেয়েছি। গত ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রণোদনা সনদ ইস্যুর ক্ষমতা অত্র সংগঠনের ওপরেই ন্যস্ত ছিল। কিন্তু কৌশলে ‘বাংলাদেশ জুট মিলস এসোসিয়েশন’ (বিজেএমএ) পুরো ক্ষমতাটি তাদের দখলে নিয়ে গেছে। তারা এখন আমাদের বিরোধিতা করছে। অথচ তারা মাত্র ১২ শতাংশ পাটপণ্য রপ্তানি করে থাকে।’
[৩] তিনি জানান, পাটপণ্য রপ্তানির প্রণোদনা সনদ ইস্যুর ক্ষমতা বিজেজিইএ’র ওপর ন্যস্ত করার বিষয়টি এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠালেই তা কার্যকর হবে।
[৪] অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পাটপণ্য রপ্তানির প্রণোদনা সনদ ইস্যুর ক্ষমতা বিজেজিইএ’র ওপর ন্যস্ত করার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন-এর তদন্ত দল এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন কর্মকর্তা পৃথকভাবে বিজেজিইএ’র কার্যালয় এবং সংগঠনের সদস্যদের কারখানা সরেজমিনে প্রদর্শন করে ইতিবাচক মতামত দেন। পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর একটি প্রতিনিধিদল অধিকতর তদন্ত করে এবং বিজেজিইএ’র অনুকূলে মতামত দেয়। এ পেক্ষিতে সার্বিক মতামত ও প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দুই বছরের জন্য পাটপণ্য রপ্তানির প্রণোদনা সনদ ইস্যুর ক্ষমতা বিজেজিইএ’র ওপর ন্যস্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও অর্থ বিভাগ থেকে পুনরায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।
[৫] চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিজেজিইএ-কে রপ্তানি সনদ প্রদানের জন্য মনোনীত করায় এ বিষয়ে বিজেএমএ’র বিরোধীতা ও তাদের মন্তব্যকে ‘অনৈতিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়েছে, অত্র সংগঠনের সদস্যরা দেশের স্বার্থে বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত রপ্তানি সনদের ভিত্তিতে বৈচিত্রময় পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আসছে। এ সংগঠনের সদস্যরা সিসিআইঅ্যান্ডই থেকে রপ্তানি নিবন্ধন লাইসেন্স এবং পাট অধিদপ্তর থেকে রপ্তানি নিবন্ধন লাইসেন্স প্রাপ্ত রপ্তানিকারক। বৈচিত্রময় পাটজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে তারা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে ভূমিকা রেখে চলেছেন। এ প্রেক্ষিতে একাধিক তদন্ত ও পর্যালোচনার পরও বিজেজিইএ-কে রপ্তানি সনদ প্রদানের চূড়ান্ত অনুমতি প্রদানে বিলম্ব হওয়ায় সংগঠনের সদস্যরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।