গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা
সোহেল রহমান : [১] মহেশখালি অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা)-এর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। তিন বছর মেয়াদে বাস্তবায়িতব্য প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে ‘বেজা’।
[২] বেজা সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার মহেশখালি (মৌজা: ধলঘাটা) উপজেলা। মহেশখালি অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা)-এর জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ করাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
[৩] সূত্র জানায়, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি-তে শিল্পখাতের অবদান আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে ৪২ শতাংশে উন্নীত করা এবং শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পণ্যের উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি, শ্রমঘন শিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, রপ্তানিমূখী শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, শিল্প উৎপাদনে বেসরকারি খাতের প্রসার, উৎপাদন বহুমূখীকরণ এবং শিল্প উৎপাদনে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির ঊপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
[৪] অন্যদিকে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা-৯-এ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শিল্পায়ন এবং জাতীয় পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান ও জিডিপিতে শিল্পখাতের অংশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এই খাতের অবদান দ্বিগুণ করা হবে’ মর্মে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা ৮-এ শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। তাই প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ৮ও ৯ এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। [৫] প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মহেশখালি অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা) স্থাপনের জন্য গ্যাস ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে এবং শিল্পের বিকাশ, বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানী আয় বৃদ্ধি এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের বিকাশ, আপামর জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, কক্সবাজার জেলা ও তৎসংলগ্ন এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিসহ দেশের সামগ্রিক টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
[৬] প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ১৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণ; ইনডোর সাব-স্টেশনসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণ; ১টি ইটিপি নির্মাণ; ৬-তলা ভিত্তি বিশিষ্ট ২ হাজার ১৫ বর্গমিটারের ৪-তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ; ৬.১৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ; ১২.৫০ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ, ৯ কিলোমিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ; ২৭ কিলোমিটার ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন (সুয়ারেজ) নেটওয়ার্ক নির্মাণ; ১২.৫০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক স্থাপন ইত্যাদি।