বিদ্যুৎ ও সারের বকেয়া পরিশোধ ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ছাড়বে সরকার
সোহেল রহমান : [১] বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও সার সরবরাহকারীদের প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার বকেয়া বিল পরিশোধে বিশেষ বন্ড ইস্যু করবে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই বন্ড ইস্যু শুরু করা হতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও সার সরবরাহকারীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ৪০টি ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য এই বন্ড ব্যবহার করা হবে।
[২] বিশেষ বন্ড ইস্যুর বিষয়ে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাজেট ঘাটতি যাতে বেড়ে না যায় এবং বাজেট ঘাটতি আইএমএফ-এর শর্তসীমার মধ্যে রাখতে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদক ও সার আমদানিকারক উভয়ের ব্যাংক দায় নিষ্পত্তির জন্য বন্ড ইস্যুর পুরো প্রক্রিয়া দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
[৩] জানা যায়, এর আগে সর্বশেষ ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ ধরনের একটি পদক্ষেপ নিয়েছিল সরকার। সেটি ছিল ওই সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণের শর্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর বকেয়া ভর্তুকি নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে। চলমান ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের জন্য আইএমএফ এ ধরনের শর্ত দিয়ে দেয়নি, তবে বাজেট ঘাটতির একটি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
[৪] জানা যায়, গত দেড় বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সার ও জ্বালানির দাম বেশি থাকায় বকেয়া বেড়েছে। এতে করে বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভর্তুকির প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে।
[৫] জানা যায়, প্রথমেই নিষ্পত্তি করা হবে সারের ভর্তুকি বাবদ বকেয়ার অর্থ। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং বেসরকারি সার আমদানিকারকদের কাছে সরকারের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বকেয়া বিল রয়েছে। এদের ১০টি ব্যাংকের কাছে ঋণ রয়েছে এবং এর অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক।
[৬] অন্যদিকে প্রায় ১০০টি বেসরকারী বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর কাছে সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বকেয়া ভর্তুকি বিল রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে অর্থ বিভাগ আইপিপিদের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে।
[৭] বিশেষ বন্ডের সুদ হার ও মেয়াদপূর্তির সময়সীমা নির্ধারণে গত মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বন্ডের সুদ বিদ্যমান ট্রেজারি বিল ও বন্ডের চেয়ে কিছুটা কম হবে বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।
[৮] সূত্রমতে, ব্যাংকগুলো বন্ডের ওপর একটি নির্দিষ্ট সুদের হার পাবে এবং ব্যাংকের তারল্য বাড়াতে এটি ব্যবহার করতে পারবে।