১ হাজার ৩৩৩টি ভূমি অফিস নির্মাণের উদ্যোগ ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা
সোহেল রহমান : [১] সারাদেশের জনগণের দোরপ্রান্তে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পৌঁছানো ও ভূমি সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ হাজার ৩৩৩টি ভূমি অফিস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের ৮টি বিভাগের মোট ৬১টি জেলার ৩৯৩টি উপজেলার ১ হাজার ৩৩৩টি ইউনিয়নে এসব ভূমি অফিস নির্মাণ করবে ভূমি মন্ত্রণালয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদী (চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
[২] ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ হাজার ৩৩৩টি ভূমি অফিস নির্মাণের মাধ্যমে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্ম-পরিবেশ এবং সেবাপ্রার্থীদের জন্য সেবাদানের পরিবেশের উন্নয়ন হবে এবং ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ সুবিধা বাড়বে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং ভূমি প্রশাসনে ই-গর্ভনেন্স প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। [৩] প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ সমতল এলাকায় ২-তলা ভিত্তিসহ ১ হাজার ৩০০ বর্গফুট আয়তনের ১-তলাবিশিষ্ট ১ হাজার ৫১টি এবং উপকূলীয়/হাওড় এলাকায় ৩-তলা ভিত্তিসহ খোলা গ্রাউন্ড ফ্লোরযুক্ত ১ হাজার ৪৯৫ বর্গফুট আয়তনের ২-তলা বিশিষ্ট ২৮২টি শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন (সীমানা প্রাচীর, ভূমি উন্নয়ন, ড্রেইনেজ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও গেইট ইত্যাদিসহ) নির্মাণ এবং অসমাপ্ত গেইটসহ সীমানা প্রাচীরসমূহ নির্মাণ। [৪] ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সহজতর করতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি সেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দ্রুত ভূমি সেবা প্রদান ও ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করতে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে রাজস্ব সার্কেল বাড়ানোর পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমি অফিস স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর-এর পরিচালনা সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; মৌজা ও প্লটভিত্তিক ভূমি জোনিং প্রকল্প এবং ল্যান্ড অটোমেশন শীর্ষক তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ ডাটা সার্ভারে এন্ট্রি করা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাঠ পর্যায়ের জনবলকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও উপকরণ প্রদানের পাশাপাশি সফটওয়্যার অবকাঠামোর প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আলোচ্য সময়ের মধ্যে ডিজিটাল সার্ভে কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া হবে এবং অন-লাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, নামজারি ও পর্চা সরবরাহ কার্যক্রম আরও বেগবান ও আধুনিক করা হবে।
[৫] সূত্র জানায়, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই শতভাগ অন-লাইনে ভূমি উন্নয়ন কর গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকারি সম্পত্তি ও সায়রাত মহলসমূহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ডিজিটাল তথ্য ব্যাংক তৈরি করা হয়েছে। দেশের সকল উপজেলা/সার্কেল ভূমি অফিস ও সেসব অফিসের অধীনস্থ ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহে শতভাগ ই-নামজারি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ভূমি বিষয়ক যে কোন অভিযোগ/পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে কল সেন্টার চালু করা হয়েছে। এ কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমি বিষয়ক সেবা (নামজারি ও ভূমি উন্নয়ন কর) প্রদানের কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়েছে।