ভারতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আইসিসিআর স্কলারশিপ ও দুই দেশের মজবুত সম্পর্ক
প্রান্ত চ্যাটার্জি : আইসিসিআর স্কলারশিপ, মেধাবী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক প্রসারিত একটি মর্যাদাপূর্ণ সম্পূর্ণ অর্থায়নের সুযোগ, দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এই বৃত্তি শুধুমাত্র উচ্চ শিক্ষার সুবিধাই দেয় না বরং সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বোঝাপড়ার সেতু হিসেবেও কাজ করে। বৃত্তিটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান যেমন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি), ব্যাঙ্গালোর ও বিভিন্ন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটিএস)- এ অধ্যয়ন ও গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করে। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই কূটনৈতিক বিজয়ের এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হলো ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) বৃত্তি, যা দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। আইসিসিআর স্কলারশিপ, মেধাবী বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক প্রসারিত একটি মর্যাদাপূর্ণ সম্পূর্ণ অর্থায়নের সুযোগ, দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এই বৃত্তি শুধুমাত্র উচ্চ শিক্ষার সুবিধাই দেয় না বরং সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বোঝাপড়ার সেতু হিসেবেও কাজ করে।
বৃত্তিটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান যেমন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি), ব্যাঙ্গালোর ও বিভিন্ন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (আইআইটিএস) অধ্যয়ন ও গবেষণার দরজা খুলে দেয়। এই ইনস্টিটিউটগুলো তাদের একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত, যেখানে গুগল-এর সিইও সুন্দর পিচাইয়ের মতো প্রাক্তন ছাত্ররাও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ কূটনৈতিক স্টুয়ার্ডশিপের অধীনে, আইসিসিআর স্কলারশিপ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। কয়েক বছর আগে মাত্র ১০০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে, গত শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশের ৫৫০ জন এই সম্মানিত বৃত্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিলো। এই সম্প্রসারণ দৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি প্রমাণ যা দুই দেশের মধ্যে যত্ন সহকারে লালন করা হয়েছে। এটি উল্লেখযোগ্য যে ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে, আফগানিস্তান দেশগুলোর জন্য আইসিসিআর বৃত্তি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার দৃঢ় কূটনীতি শুধুমাত্র বৃত্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠাই নয়, প্রাপকের সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করে শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার তাৎপর্যকে নির্দেশ করে। এই কূটনৈতিক অর্জনের আসন্ন প্রভাব কেবল একাডেমিয়াতেই নয়, পেশাদার ক্ষেত্রেও স্পষ্ট হবে। বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা, যারা আইসিসিআর স্কলারশিপের মাধ্যমে ভারতে তাদের শিক্ষা গ্রহণ করবে, তারা পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ঢাকা মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে একটি ক্রমবর্ধমান ভূমিকা পালন করবে। এই উদীয়মান প্রবণতা শুধুমাত্র একাডেমিক উৎকর্ষতাই নয়, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের জন্য জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগও প্রদর্শন করবে।
আইসিসিআর স্কলারশিপের সাফল্যের গল্প বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মজবুত কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার না করে বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, উভয় দেশই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান করেছে ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেছে, একাডেমিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। শেখ হাসিনার দৃঢ় কূটনীতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ইতিবাচক গতিপথ গঠনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। তার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি শুধু বিবাদই মীমাংসা করেনি বরং শিক্ষাগত ও পেশাগত আদান-প্রদানের পথও প্রশস্ত করেছে, যার উদাহরণ আইসিসিআর স্কলারশিপের সম্প্রসারণের মাধ্যমে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দুই দেশ বাণিজ্য, নিরাপত্তা, পানি সম্পদ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করেছে। সহযোগিতার এই সমৃদ্ধ টেপেস্ট্রি সেই পটভূমি তৈরি করে যার বিপরীতে আইসিসিআর স্কলারশিপ বিকাশ লাভ করেছে, এই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উপসংহারে আইসিসিআর স্কলারশিপ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক অডিসিতে বন্ধুত্ব ও অগ্রগতির আলোকবর্তিকা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতি অটল অঙ্গীকার শুধু শিক্ষার পথই খুলে দেয়নি বরং ভবিষ্যতের ভিত্তিও তৈরি করেছে যেখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মেধা তাদের জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমরা যখন বিকশিত অংশীদারিত্বের প্রত্যক্ষ করি, তখন এটা প্রতীয়মান হয় যে শেখ হাসিনার কূটনীতি প্রকৃতপক্ষে স্থায়ী বন্ধুত্ব ও ভাগাভাগি সমৃদ্ধির গল্প রচনা করেছে।
লেখক : সাবেক আইসিসিআর স্কলার, কলামিস্ট, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, এনআইটি দুর্গাপুর, ভারত। সূত্র : ডেইলি অবজার্ভার। অনুবাদ : মিরাজুল মারুফ