বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, স্মার্ট এয়ারলাইন হওয়ার পথে
তাহেরা খন্দকার : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখন ওয়েব টিকিটিং, ওয়েব চেক-ইন, ওয়েব-ভিত্তিক রিফান্ড সিস্টেম ও লয়্যালটি প্রোগ্রামের মতো অনলাইনভিত্তিক পরিষেবা চালু করে একটি স্মার্ট এয়ারলাইন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের শুরুতে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিষেবা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে তাদের নতুন মোবাইল অ্যাপস ও লয়ালটি প্রোগ্রাম চালু করেছে। যেকোনো স্মার্টফোনে গুগল প্লেস্টোর বা অ্যাপল স্টোর থেকে বিমান অ্যাপ ডাউনলোড করে যাত্রীরা ছাড়ের মূল্যে বিমানের সব গন্তব্যের টিকিট কিনতে পারবেন। যাত্রীরা এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টিকিট কিনতে, পছন্দসই আসন বুক করতে বা ফেরত পেতে পারেন। তারা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট (ডরিøউ ডরিøউ ডরিøউ.বিমান-এয়ারলাইনস.কম) থেকেও একই সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। জাতীয় পতাকা বাহকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার সহ হিসাবহীন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, ২০২৩ সালকে জাতীয় পতাকা বাহকের জন্য সেরা গতি হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। বিমান ঢাকা-নারিতা-ঢাকা ও ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করার পাশাপাশি ঢাকা-গুয়াংজু-ঢাকা রুট পুনরায় চালু করেছে। বিগত বছরে দেশের সবচেয়ে বড় হজ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে বিমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দক্ষ প্রশিক্ষক পাইলটরা বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার পরিচালনার জন্য এমআইএটি মঙ্গোলিয়ান এয়ারলাইন্সের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বিমান সম্প্রতি একটি স্বনামধন্য ফ্লাইট ডিসপ্যাচ সলিউশন, লিডো ফ্লাইট ৪ডি চালু করেছে।
জাতীয় পতাকা বাহক বাংলাদেশের একমাত্র গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কোম্পানি। অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ওআরএম), লোড কন্ট্রোল (এলওডি), প্যাসেঞ্জার অ্যান্ড ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং (পিএবি), এয়ারক্রাফ্ট হ্যান্ডলিং অ্যান্ড লোডিং (এইচডিএল), অসামান্য গ্রাউন্ড অপারেশন্স প্রোগ্রামের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আইএটিএ সেফটি অডিট ফর গ্রাউন্ড অপারেশনস প্রোগ্রাম (আইএসএজিও) অর্জন করেছে। হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সে এয়ারক্রাফট গ্রাউন্ড মুভমেন্ট (এজিএম) ও কার্গো অ্যান্ড মেইল ??হ্যান্ডলিং (সিজিএম)। ২০২৩ সালে বিমান আন্তর্জাতিক মানের গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট (জিএসই) ক্রয় প্রক্রিয়া করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব শফিউল আজিমের গতিশীল নেতৃত্বে একটি সেবামুখী কর্পোরেট সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) কার্যক্রম যেমন মুক্তা পানীয় জল ব্যবহার করে প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক মানুষদের সহায়তা করা, খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা করা, প্রত্যাবাসন ফ্লাইট পরিচালনা করা অভিনব অনুশীলনে পরিণত হয়েছে।
অভ্যন্তরীণভাবে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার অনলাইন চেক-ইন সিস্টেম, অনলাইন রিফান্ড সিস্টেম, লয়ালটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, এমটি ই-পাস সিস্টেম, যাত্রীদের রিফান্ড আবেদনের উত্তরে ইমেইল বিজ্ঞপ্তি, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম), গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্টের উন্নয়ন প্রক্রিয়া করেছে। ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ট্রেনিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ইন্টিগ্রেটেড পার্সোনাল ইনফরমেশন সিস্টেম, বিগ ডেটা অ্যানালাইসিস সিস্টেম ইত্যাদি। এগুলো স্মার্ট এয়ারলাইনার্সের জন্য বিমানকে তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সাহায্য করে। বিমান আইএটিএ এর সঙ্গে একটি ডাইরেক্ট ডেটা সলিউশন চুক্তিও করেছে। এদিকে গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিমান তাদের কল সেন্টার আপগ্রেড করছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে, বিমান রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করেছে অর্থাৎ ২০২১-২০২২ সালে ২.২ মিলিয়নের তুলনায় ৩.১ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করেছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে বিমানের আন্তর্জাতিক বাজারের শেয়ার ২২ শতাংশে পৌঁছেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ার সেরা ১০ এয়ারলাইন্সের একটি হিসেবে বৈশ্বিক মর্যাদা অর্জনের অপেক্ষায় রয়েছে।
লেখক : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ)। সূত্র : দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস। অনুবাদ : মিরাজুল মারুফ