তিন বছরের মধ্যে ডিসেম্বরে সবচেয়ে কম এলসি নিষ্পত্তি
মো. আখতারুজ্জামান : [১] গত কয়েক মাস ধরে আমদানি হ্রাসের কারণে ডিসেম্বরে আমদানি ঋণপত্র এলসি নিষ্পত্তি ৪.৫৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
[২] কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের নভেম্বরে এলসি নিষ্পত্তির জন্য সর্বনিম্ন ৪.৪১ বিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করা হয়েছিল। এলসি নিষ্পত্তি কেন কমেছে, এ বিষয়ে চাইলে জানতে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা বছরখানেক ধরে গড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারের এলসি খুলছি। ফলে আমাদের পেমেন্টের চাপও আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। ডিসেম্বরে মূলত পেমেন্টের চাপ কম থাকার কারণে এলসি সেটেলমেন্ট নিষ্পত্তি কমেছে।
[৩] ব্যাংকগুলো এখন সাইট ও ডেফারড, দুই ধরনের এলসিই খুলছে উল্লেখ করে এই অভিজ্ঞ ব্যাংকার বলেন, গত দুই মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ভালো থাকার কারণে ব্যাংক খাতে এখন ডলারের তারল্য পরিস্থিতি ভালো। তাই ব্যাংকগুলো এখন ডেফারড এলসির পাশাপাশি সাইট এলসিও খুলছে, বলেন তিনি।
[৪] কোনো সাইট এলসি খোলা হলে সেটির পেমেন্ট এক সপ্তাহের মধ্যে করে দিতে হয়। ব্যাংকগুলোর হাতে ভালো ডলার তারল্য থাকলে তারা সাইট এলসি খুলে থাকে। ডেফারড এলসি খোলা হলে সেটির পেমেন্টের জন্য ৯০ থেকে ১৮০ দিন সময় পাওয়া যায়।
[৫] ব্যাংকগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডেফারড এলসি খুলে আমদানি করে থাকে। ডিসেম্বরে যেসব এলসির পেমেন্ট করা হয়েছে, সেগুলোর একটি বড় অংশের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে।
[৬] ডিসেম্বরে ৪.৯০ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে এলসি খোলার পরিমাণ ৭ শতাংশ কমেছে। গত জুনে ৪.৮৭ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল।
[৭] কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই-নভেম্বর সময়কালে ভোগ্যপণ্যের জন্য এলসি খোলার পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৭ শতাংশ কমেছে। এছাড়া এই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও মধ্যবর্তী পণ্যে জন্য এলসি খোলা কমেছে ১৭ শতাংশ।
[৮] কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের অক্টোবরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি হয়েছিল ৯৬ টাকায়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ডলার দাম বাড়িয়ে ১১০ টাকা করা হয়। টাকার এই অবমূল্যায়নের কারণে এলসি পরিশোধের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তবে ডলার কিনতে ব্যবসায়ীদের ১২২-১২৩ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে হচ্ছে।