বিদেশি চাপ আছে, অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে : কাদের
আমিনুল ইসলাম : [১] দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ আছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই চাপ মোকাবিলা করার সক্ষমতা সরকারের আছে বলেও মনে করেন তিনি। রাজধানীর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে রোববার সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
[২] দেশের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এগুলো অতিক্রম করতে হবে, এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না। ভোটের পর দেশি-বিদেশি কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না? আবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে কয়েকটি সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চাপ নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, চাপ বিদেশ থেকেও আছে। দেশে তো আছেই কিন্তু আমরা অতিক্রম করার ক্ষমতা রাখি, সাহস রাখি, সামর্থ্য রাখি। আমরাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের সম্পর্ক মাটি আর মানুষের সঙ্গে।
[৩] অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশে চাপ আসবে। আমাদের অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র আছে। এগুলো অতিক্রম করতে হবে, এগুলোকে ভয় পেলে চলবে না। সাহস রাখতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই চলতে হবে- এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, মাটি ও মানুষের সঙ্গে যে সরকারের, যে দলের সম্পর্ক সেই দল কোনো বিদেশি চাপ বা দেশি চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না। আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। পথে পথে বাধা, পদে পদে বাধা এটা আমরা অতিক্রম করেছি। আমরা অতিক্রম করেছি নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি। এখন নির্বাচন তো হয়েই গেছে। অনেকে ভেবেছে এই নির্বাচন আমরা করতে পারব না। তাদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়িত করেছি। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ আসবে আমরা জানি, সেগুলো মোকাবিলা করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।
[৪] দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে গ্রামীণ বাজারগুলো পর্যন্ত ভরপুর; খাদ্য সামগ্রী, ফল-মূল। আমাদের পার্বত্য এলাকায় রাস্তা হওয়ায় প্রচুর জিনিস বাজারে আসছে। দ্রব্যমূল্য দেখতে পাচ্ছেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। নিম্ন আয়, স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ কষ্ট লাঘব করা দরকার এবং এটা প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন। এখন সর্বাত্মক চেষ্টা আমাদের চালাতে হবে। দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের সক্ষমতার মধ্যে থাকে।
রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এখনি
প্রত্যাহার করছে না ভারত
বিশ্বজিৎ দত্ত : [১] গত মাসে ভারতে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৫.৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি ভারতে চার মাসের সর্বোচ্চ। এই অবস্থায় চাল, গম এবং চিনির রফতানির উপরে চাপানো কড়াকড়ি প্রত্যাহার করার যে কোনও সম্ভাবনা নেই তা জনিয়ে দিয়েছে ভারত।
[২] ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। মূল্যবৃদ্ধির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন যে কোনও সিদ্ধান্তের আগেই এখন পাঁচ বার ভাবনাচিন্তা করবে না সে দেশের সরকার। [৩]গত এক-দেড় বছর ধরে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম চড়া। সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে খাদ্যপণ্য এবং আনাজপাতির দর। যা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসায় কেন্দ্রও এই বিষয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে। দেশের বাজারে জোগান বাড়িয়ে খাদ্যপণ্যের দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে একের পর এক পদক্ষেপ করে চলেছে তারা।
[৪] ২০২২ সালের মে মাসে গমের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপায় কেন্দ্র। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে তা চাপে বাসমতি ছাড়া অন্যান্য চালের উপরে। গত অক্টোবরে বন্ধ করা হয় চিনি রফতানি। এমনকি, টোম্যাটো রফতানিতেও সম্প্রতি মোটা শুল্ক চাপানো হয়েছে। তাতে মহারাষ্ট্রের টোম্যাটো চাষি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হলেও অনমনীয়ই রয়েছে ভারত।
[৫]গতকাল ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, চাল, গম এবং চিনি রফতানিতে যে নিষেধাজ্ঞা চাপানো রয়েছে তা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনও প্রস্তাব নেই। তবে গম এবং চিনি আমদানিও করবে না ভারত। এমন কোনও পরিকল্পনা বা প্রয়োজনীয়তা নেই।