মজুতদারি শক্ত হাতে দমন করা হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
সোহেল রহমান : [১] মজুতদারি শক্ত হাতে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
[২] তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইতোপূর্বে আরও অনেকবার শুধু মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু এবার কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দেশে কোন সিন্ডিকেট নেই, কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারবেও না। গুটিকয়েক লোক পণ্য বাজার অস্থিতিশীল করছে। এসব মজুতদারদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
[৩] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর রোববার সচিবালয়ে প্রথম কার্যদিবসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু এসব কথা বলেন।
[৪] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদক ও আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা এবং পুঁজিবাজারের আদলে কমোডিটি ইনডেক্স (পণ্যমূল্য সূচক) চালু করা হবে। নিত্যপণ্যের আজকের (১৪ জানুয়ারি) বাজারমূল্যকে ভিত্তি ধরে আমরা কাজ করতে চাই। অন্যদিকে ব্যবসা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে, যারা এটা করবেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। অন্যথায় সরকার ব্যবস্থা নেবে। ব্যবসায়ীদের ভয় দেখানোর জন্য এ কথা বলছি নাÑ এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
[৫] একজন ব্যবসায়ী হিসেবে ভোক্তা স্বার্থ কতটুকু রক্ষা করা সম্ভব হবে বা মজুতদারদের বিরুদ্ধে আদৌ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে কি নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি পুঁজিবাজারের ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট ছিলাম। কিন্তু গত পাঁচ বছর আমি কোন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। সুতরাং আমি এখন ব্যবসায়ী নই। কোন ব্যবসায়ী বা কোন গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণে নয়, জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে দায়িত্ব নিয়েছি। আর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।
[৫] প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। যে কোন প্রয়োজনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরাসরি মন্ত্রী, সচিব কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন চিঠি চালাচালি করা হবে না।
[৬] দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তবে এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রথমত: দেশে ডলারের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং যুদ্ধের কারণে শিপিং ব্যয় বৃদ্ধি।
[৭] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে শতভাগ সফল হয়তো হতে পারবো না, তবে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হবে। বর্তমানে দেশে কোন পণ্যের ঘাটতি নেই। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে ভারত থেকে যেসব পণ্য কেনা হয়, সে বিষয়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সঙ্গে শিগগিরই কথা বলবো, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
[৮] তিনি বলেন, আমরা রপ্তানিকে বৈচিত্রময় করতে চাই। আমরা গার্মেন্টসের ওপর অনেক নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বলেছেন, গার্মেন্টসের মতো একই রকম সুযোগ-সুবিধা চামড়া ও পাট শিল্পের ব্যবসায়ীদের দেয়া হবে। সেখানে আমাদের ভ্যালু এডিশন অনেক বেশি।
[৯] টিসিবি’র পণ্য নেয়া এক কোটি পরিবারকে কবে নাগাদ স্মার্ট কার্ড দিতে পারবেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিসিবি’র যে এক কোটি পরিবার রয়েছে তাদের তথ্য নিয়েছি সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে সেগুলোর কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে। আশা করছি জুনের মধ্যে কার্ড দিতে পারবো। তার জন্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না। এখন যে তালিকা আছে সেটা ধরেই দেবো। এটা হলে ডিজিটাল যে ব্যবস্থা তখন সবাই হাতে হাতে পাবে।