বাংলাদেশে নিত্যপণ্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার আশ্বাস মোদির
অর্থনীতি ডেস্ক : [১] টানা চতুর্থবারের মতোন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় এর আগে গত ৮ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফোনালাপে তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানান বিষয়ে আলোচনা হয়।
[২] চিনি, পেঁয়াজ, চাল ও গমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
[৩] নিজ দপ্তরে দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসান ইসলাম টিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ভারত পেঁয়াজসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্য রপ্তানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য শিথিল করবে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এ বার্তা দিয়েছেন।
[৪] গত রোববার সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
[৫] টানা চতুর্থবারের মতোন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় এর আগে গত ৮ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফোনালাপে তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানান বিষয়ে আলোচনা হয়।
[৬] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়। অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমি নিজেও ভারত সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং করব। বাংলাদেশের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে নিয়মিতভাবে আমদানি যাতে সচল থাকে, সে বিষয়ে কথা বলবো।
[৭] বাংলাদেশ চাল, গম, পেঁয়াজ, আলুসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য ভারতের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বাংলাদেশ এসব পণ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি করে ভারত থেকে। বিভিন্ন সময় ভারত এসব পণ্যের কোনো কোনটির রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে– তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের বাজারে এগুলোর দাম অনেক বেড়ে যায়।
[৮] তাই দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ভারত থেকে নিয়মিতভাবে আমদানি অব্যাহত রাখতে চায় বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে, প্রতিবছর ভারত থেকে ১৫ লাখ টন চাল, ২০ লাখ টন গম, ১০ লাখ টন চিনি, ৬ লাখ টন পেঁয়াজ, ১ লাখ টন আদা ও ৫০ হাজার টন রসুন আমদানির কোটা চেয়েছে বাংলাদেশ।
[৯] ভারতের পক্ষ থেকে এসব পণ্যে বাংলাদেশকে কোটা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলেও- প্রতিবেশী দেশটি নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে গম, চাল, চিনি, পেঁয়াজ ও আলু রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
[১০] প্রতিবছর গড়ে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। এছাড়া, ২০২২ সালের মে মাসে রপ্তানি নিষিদ্ধ করার আগে বাংলাদেশের মোট গমের চাহিদার ৬২ শতাংশ ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। গত অর্থবছর বাংলাদেশ ৫১৩ মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করেছে বাংলাদেশ, এর ৬৩.৮ শতাংশই আমদানি হয়েছে ভারত থেকে।
[১১] ২০১৯ সালে ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা অতিক্রম করে। তখন থেকে কোনো পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করার আগে বাংলাদেশকে বার্তা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী। তবে ভারত সে অনুরোধ রাখেনি।