এপ্রিলে চালু হবে চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র এক অংশ ৯২ শতাংশ কাজ শেষ
শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম : [১] চট্টগ্রামে উদ্বোধন হওয়া মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রায় ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে বিভিন্ন ¯’ানে উঠানামার জন্য ১৪টি র্যাম্প’র কাজ এখনো শুরু না হলেও বাকি কাজ শেষে এপ্রিলে যানবাহন চলাচলের জন্য একপাশ উন্মুক্ত করার কথা ভাবছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সং¯’া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্ত”প (সিডিএ)।
[২] এমনটি জানিয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ার কারণে উদ্বোধনের পরপরই যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। প্রকল্পের বাকি কাজগুলি শেষ হলে যান চলাচল শুরু করা হবে। তখন লালখান বাজার হয়ে পতেঙ্গায় গিয়ে নামবে গাড়ি। র্যাম্প নির্মাণ না হওয়ায় মাঝখানে ওঠানামার সুযোগ থাকছে না। র্যাম্পসহ প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করতে কিছু সময় লাগবে বলে তিনি জানান।
[৩] প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠানামার জন্য বিভিন্ন ¯’ানে ১৪টি র্যাম্প থাকার কথা রয়েছে। কিš’ু এখন পর্যন্ত একটি র্যাম্পও নির্মাণের কাজই শুরু হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিলে একপাশ দিয়ে যান চলাচল চালু করে অন্য পাশ দিয়ে র্যাম্প এর কাজ করা হবে বলে জানান।
[৪] সরেজমিন দেখা গেছে,নগরীর পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলেও টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত কাজ চলছে। এ ছাড়া পুরো প্রকল্পে এখনও বিভিন্ন ¯’ানে কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে যান চলাচল অব¯’ায় ওঠানামার জন্য ১৪টি র্যাম্পএর কাজ চলামান।
[৫]এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন। পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের কাজ এখন পর্যন্ত প্রায় ৯২ শতাংশ শেষ হয়েছে। আশা করছি এপ্রিল মাসে এটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারবো। এখনও র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। এপ্রিলে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত গাড়ি চলবে। মাঝখানে বিভিন্ন ¯’ানে এখনো ওঠানামার কোনও সুযোগ থাকবে না।
[৬] তিনি জানান, চার হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের জুনে।
[৭] চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্ত”পরে (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। এ কারণে নগরীতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। এখনও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এ সড়কে শিগগিরই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। বাকি কাজ চলমান থাকবে।
[৮] তিনি আরো বলেন, শুরুর দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ২৪টি র্যাম্প থাকার কথা থাকলেও এখন হবে ১৪টি। এখনও র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে এখন কোনও প্রকার টোল আদায় করা হবে না। পুরোপুরি নির্মাণের পর টোল আদায় করা হবে।
[৯] সিডিএ সূত্র জানায়, নগরীর যানজট নিরসনের ল্েয ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
[১০] দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। একই সময়ে প্রকল্পের নির্মাণব্যয় বাড়িয়ে চার হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা করা হয়।
[১১] সিডিএ’র এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র্যাংকিন। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের, ৫৪ ফুট প্রশস্ত এবং চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৪টি র্যাম্প। এর মধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় দুটি।