টাঙ্গাইলে সাধু-সন্ন্যাসীদের ছাপরা ঘরে মাদকসেবন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : [১] টাঙ্গাইলে ফাইলা পাগলার মেলায় অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি ও মাদকসেবী সাধু-সন্ন্যাসীদের প্রায় ৬০টি ছাপরা ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে থানা পুলিশ। [২] গত শুক্রবার বিকেলে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের ফাইলা পাগলার মেলায় এ অভিযান চালানো হয়। জানা যায়, প্রতি বছর শীতের মৌসুমে ওই স্থানে ফাইলা পাগলার মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ বছর ধরে মেলাটি হয়ে আসছে।
[৩] স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় একসপ্তাহ ধরে মেলাটি শুরু হয়েছে। মাসব্যাপী চলে মেলাটি। মেলায় টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার মানুষ মনোবাসনা পূরণে নানা ধরনের ‘মানত’ নিয়ে আসে এই মেলায়। ভক্ত ও আশেকানরা তাদের ‘মানত’ করা গরু, ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মোরগ, চাল-ডালসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে মেলায় এসে রান্না করে খেয়ে থাকেন। পাগলের মাজারকে ঘিরে চলে নাচ-গানও। [৪] মাজারে মেলা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে ওঠে। সেই সঙ্গে গড়ে ওঠে মাদকসেবীদের ভ্রাম্যমাণ আস্তানাও। সেই আস্তানায় ছাপরার আদলে ছোট ছোট টং ঘরে চলে মাদক বিক্রি ও সেবন। দিনরাত চলে কলকিতে গাঁজা সেবন। গাঁজার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে মেলার চারপাশ। সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, মেলাটির অনুমোদন এখনো হয়নি। মেলা পরিচালনা কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা থেকে এটি অনুমোদন হবে। মেলার বিপক্ষে সখীপুর থানা পুলিশ কখনোই যাবে না। [৫] কিন্তু মেলাকে কেন্দ্র করে জুয়ার আসর, নাগরদোলা, পুতুলনাচ, মাদক বিক্রি ও সেবন কোনোক্রমেই চলতে দেয়া হবে না। মেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মেলার মতোই চলবে। কোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড যাতে না হয় সে লক্ষ্যে শুক্রবার বিকেলে পুলিশের একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধু-সন্ন্যাসীদের মাদক বিক্রির ও সেবনের ৬০টি টং বা ছাপরা ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
[৬] অভিযানকালে দেখা যায়, ওই সব ছাপরা ঘরে গাঁজা বিক্রি ও সেবন চলছিল। উঠতি বয়সী কিছু যুবক মাদক ক্রয় ও সেবন করছিল। এ কারণে ছাপরা ঘরগুলো ভেঙ্গে ধ্বংস করা হয়।তিনি আরও জানায়, আমরা সতর্ক করে দিয়েছি। পুনরায় মাদকের আস্তানা চালু হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদকের ব্যাপারে কাউকে ছাড় নয়।
[৭] এ বিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, মেলাটি অনুমোদনের জন্য জেলায় আবেদন করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে অনুমোদন পাওয়া যাবে। তবে তিনি সখীপুর থানার ওসিকে আজকের মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে সাধুবাদ জানিয়েছেন। গাঁজা বিক্রি ও সেবন বন্ধ করায় মেলার পরিবেশ আরও সুন্দর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।