এস.ইসলাম জয় : [১] প্রথমবারের মতো বন্ড ইস্যু করে বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর আইপিপি বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা শুরু করেছে সরকার। মোট ২ হাজার ৬২ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ছেড়ে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের দায় সমন্বয় করবে। বন্ডের কুপন রেট বা সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ শতাংশ। এ হার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা রেপো রেটের সমান। তবে ভবিষ্যতে রেপো রেট বাড়লে এ বন্ডের সুদহারও বাড়বে, রেপোর সুদ কমলে বিশেষ বন্ডের সুদও কমবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রনালয়।
[২] বুধবার সচিবালয়ে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংকের বিশেষ বন্ড ছাড়ার বহুপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে সিটি ব্যাংকের অনুকূলে ১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা এবং পূবালী ব্যাংকের অনুকূলে ৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বন্ড ছাড়ার চুক্তি সম্পন্ন করে।
[৩] জানা গেছে, বন্ড ছাড়ার ফলে সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক এখন আর দেনাদারদের কাছে টাকা চাইতে পারবে না। বন্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংকের দায় সমন্বয় হয়ে যাবে। আর ব্যাংক সুদ পাবে ছয় মাস পরপর। মেয়াদ শেষে সুদসহ ব্যাংকের পাওনা সরকার পরিশোধ করবে। তখন বন্ডগুলোও সরকার ফেরত নেবে। সাধারণত বন্ড ১৫ থেকে ২০ বছর মেয়াদি হলেও বিশেষ বন্ডের মেয়াদ হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ বছর।
[৪] বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ বন্ড ছাড়া হয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানের দায় মেটাতে, সেগুলো হচ্ছে সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, কনফিডেন্স পাওয়ার, বারাকা, কুশিয়ারা, ডরিন, অ্যাক্রন পাওয়ারের বিপরীতে। ধাপে ধাপে আরও কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে বিদ্যুতের দায় মেটাতে বিশেষ বন্ড ছাড়ার চুক্তি হবে বলে অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়। পরের দফায় চুক্তি হতে পারে ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে।
[৫] অর্থ বিভাগের ট্রেজারি অ্যান্ড ডেট ম্যানেজমেন্ট অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পর্যায়ক্রমে সব আইপিপির বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হবে। এতে সরকারকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করতে হবে।
[৬] আইপিপিগুলোর বকেয়া এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এজন্য অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি।
[৭] অবশ্য আইপিপি ও সারের বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধ করতে আগে থেকেই বন্ড ইস্যুর উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ বিভাগ। গত ৪ জানুয়ারি প্রথম দিন ৩ হাজার ৩১৬ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ইস্যূ করে সার আমদানির বকেয়া পরিশোধ করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
[৮] এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে পাঁচ ব্যাংকের অনুকূলে সার খাতের ভর্তুকি বাবদ ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি বন্ড ইস্যু করেছে সরকার।