ভারতের অন্তবর্তি বাজেট নজর দেয়া হচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি ও সুদে
বিশ্বজিৎ দত্ত : [১]এই সপ্তাহে অন্তর্বতী বাজেট ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এমনিতে আসন্ন লোকসভা ভোটের ফল বেরনো পর্যন্ত বাকি দিনগুলির জন্য সরকারের খরচ-খরচার বন্দোবস্ত করা ছাড়া এই বাজেটে আর কিছু থাকার কথা নয়। তবে ওই ভোটের প্রেক্ষিতেই সেই প্রথা ভাঙতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঠিক যেমন দেখা গিয়েছিল আগের সাধারণ নির্বাচনের আগে।
[২]আজ থেকেই বাজেটের জন্য প্রহর গোনা শুরু হয়ে যাবে। চলবে নানা ধরনের জল্পনা। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সংসদে ২০২৪-২৫ সালের জন্য অন্তবর্তীকালীন বাজেট পেশ করবেন নির্মলা। তাঁর ঝুলিতে এ বার কী থাকে, সেটাই দেখার। কিছুটা ঝিমিয়ে পড়া বাজার তাই সে দিকে তাকিয়ে। লগ্নিকারীদের আশা, এই সরকারের শেষ বাজেটে এমন কিছু ‘মশলা’ থাকতে পারে, যা সূচককে ফের উপরে ঠেলবে। ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটের পরেই রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি।
[৩] ৬ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি সুদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আরবিআইয়ের ঋণনীতি কমিটি। এই দফায় অবশ্য কেউ তা কমানো বা বাড়ানোর আশা কিংবা আশঙ্কা করছেন না। তবে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় টাকার জোগানে বিপুল ঘাটতি তৈরি হওয়ায়, তার সুরাহার জন্য আরবিআই পদক্ষেপ করতে পারে। সেটা কী হতে পারে, তা জানার অপেক্ষা করছেন অনেকে।
[৪]ফেব্রুয়ারির ১২/১৩ তারিখ নাগাদ প্রকাশিত হবে খুচরো বাজারে জানুয়ারির মূল্যবৃদ্ধির হার। এই তথ্যেরও প্রভাব থাকবে শেয়ার লেনদেনে। একই সঙ্গে প্রকাশিত হবে ডিসেম্বরে শিল্পোৎপাদনের হিসাবও। পাশাপাশি আগামী মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে সংস্থাগুলির চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আর্থিক ফল প্রকাশ। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহ নানা তথ্য এবং পরিসংখ্যান চঞ্চল রাখবে বাজারকে। অনেক লগ্নিকারীই সাবধানে পা ফেলবেন। সূচক যদি আরও নীচে নামে, তা হলে সেটা সুযোগ করে দেবে কম দামে ভাল সংস্থার শেয়ার ধরার।
[৫]গত সপ্তাহে বাজার দুর্বল ছিল একাধিক কারণে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে সূচক অস্বাভাবিক উচ্চতায় পাড়ি দিয়েছিল। বেশ কিছু শেয়ারের দাম এমন লাফিয়ে বেড়েছে, যা যুক্তিযুক্ত নয়। ফলে সংশোধনের প্রত্যাশা ছিলই। পতন শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি। এ মাসের ১৫ তারিখে নজির গড়ার পরে আটটি কাজের দিনের মধ্যে ছ’দিনই নামে বাজার। এই সময়ে লাগাতার শেয়ার বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে বিদেশি লগ্নিকারীদের। ১৭-২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্রির অঙ্ক মোট ৩৬,৯১০ কোটি টাকা। তাই দেশীয় লগ্নি সংস্থাগুলি ২১,৬০৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনলেও, পতন রোধ করা যায়নি। এই তথ্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত, এখনও আমাদের বাজার বিদেশি লগ্নিকারীদের উপরে কতটা নির্ভরশীল।