৮ বছরে পরামর্শক সেবা ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি
সোহেল রহমান : [১] মেয়াদ বাড়াসহ চার কারণে ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পটির পরামর্শক সেবা ব্যয় দ্বিতীয় দফা বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে জার্মানীর প্রতিষ্ঠান ‘আইএলএফ কন্সাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স। পরামর্শক ব্যয় বাড়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি-তে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
[২] বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জার্মানীর প্রতিষ্ঠান ‘আইএলএফ কন্সাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স-এর সঙ্গে ২০১৬ সালের মার্চে মূল চুক্তি সম্পাদিত হয়। মূল চুক্তি মূল্য ছিল ১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার ২০০ ইউরো। পরবর্তীতে প্রকল্পের ডিটেইল ডিজাইন রিভিউ কাজ, চুক্তি বহির্ভূত কাজ ও প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে যাওয়ায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫২ লাখ ২৯ হাজার ২৪০ ইউরোর প্রথম সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন করা হয় এবং মোট পরামর্শক সেবা ব্যয় দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩০ হাজার ৪০০ ইউরো। বর্তমানে প্রস্তাবিত ও সম্পাদিতব্য দ্বিতীয় সম্পূরক চুক্তিতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ট্যাক্স ও ভ্যাট ছাড়া ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৮ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা)। এর ফলে সর্বমোট পরামর্শক ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ২ কোটি ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৮ ইউরো।
[৩] মন্ত্রণালয়ের দাবি মতে, প্রথম সম্পূরক চুক্তির পর দ্বিতীয় সম্পূরক চুক্তিতে পরামর্শক ব্যয় বাড়ছে প্রায় ৫০ শতাংশ (৪৯.৬৩%)।
[৪] এদিকে পর্যালোচনায় দেখা যায়, মূল পরামর্শক চুক্তিতে আর্থিক ব্যয়ের তুলনায় ৮ বছরের ব্যবধানে পরামর্শক ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি।
[৫] সূত্র জানায়, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) মানে হচ্ছে গভীর সমুদ্রে একটি ভাসমান জেটি। দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টন ডিজেল আমদানি করা হয়। বঙ্গোপসাগরের কর্ণফুলী চ্যানেলের নাব্য ৮ মিটার থেকে ১৪ মিটারের নিচে হওয়ায় অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে অপরিশোধিত তেলবাহী বড় ভ্যাসেল হ্যান্ডেল করতে পারে না চট্টগ্রাম বন্দর। যে কারণে অপরিশোধিত তেলবাহী মাদার (বড়) ভ্যাসেলগুলো গভীর সমুদ্রে নোঙর করা হয়। মাদার ভ্যাসেল থেকে লাইটারেজ করে ক্রুড আনলোড করা হয়। লাইটারেজ ব্যবহার করে অপরিশোধিত তেল আনলোড করা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এমতবস্থায় আমদানিকৃত জ্বালানি তেল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত, সহজ, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়।
[৬] জানা যায়, বর্তমানে ১ লাখ টনের অপরিশোধিত তেলবাহী একটি মাদার ভ্যাসেল খালাস করতে সময় লাগে কমপক্ষে ১১ দিন। এসপিএম পুরোদমে চালু হলে ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিজেল ও অপরিশোধিত তেলবাহী জাহাজ খালাস করা সম্ভব হবে।