সার ও এলএনজি কার্গো আমদানিসহ ক্রয় কমিটিতে ছয় প্রস্তাব অনুমোদন
সোহেল রহমান : [১] সার ও এলএনজি কার্গো আমদানিসহ ছয়টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ১৪৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
[২] বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিং-এ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড এই কার্গো সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৯৩ ডলার হিসাবে এলএনজি কার্গো আমদানিতে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ মোট ব্যয় হবে ৪২৯ কোটি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
[৩] তিনি জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার ও সৌদি আরব থেকে দুটি পৃথক প্রস্তাবে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া আমদানির দুই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাতার-এর মুনতাজাত থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯৯ লাখ ২৪ হাজার ৯০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৯ কোটি ১৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৩৩০.৮৩ ডলার।
[৪] দ্বিতীয় প্রস্তাবে সৌদি আরব-এর সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৩তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৩৪৭.৫০ ডলার।
[৫] অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের পরামর্শক ও নির্মাণ ব্যয় বাড়ায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সম্পূরক চুক্তি এবং পূর্ত কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চতুর্থ দফা সম্পূরক চুক্তি সম্পাদনে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
[৬] তিনি জানান, ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে জার্মানীর প্রতিষ্ঠান আইএলএফ কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পাদিতব্য দ্বিতীয় সম্পূরক চুক্তিতে ট্যাক্স ও ভ্যাট ছাড়া অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৮ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা)। এর ফলে সর্বমোট পরামর্শক ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ২ কোটি ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৮ ইউরো।
[৭] অতিরিক্ত সচিব জানান, অন্যদিকে প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিপিপিইসি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পাদিতব্য চতুর্থ সম্পূরক চুক্তিতে ট্যাক্স ও ভ্যাট ছাড়া অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ২ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮২ কোটি ৮২ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
[৮] তিনি জানান, বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে হাওর এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প (পাউবো অংশ)-এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বাড়ার দ্বিতীয় ভেরিয়েশন একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ভেরিয়েশন প্রস্তাবে ব্যয় বাড়ছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ইতোপূর্বে প্রথম ভেরিয়েশন প্রস্তাবে ব্যয় বেড়েছিল ১৩ কোটি ২৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। মূল চুক্তিতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৮ কোটি ৩২ লাখ ২৮ হাজার টাকা। দুই ভেরিয়েশন প্রস্তাবে মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১০৮ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ মোট ব্যয় বাড়ছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে যৌথভাবেÑ নিপ্পন কোই কোং. লিঃ; বিইটিএস কনসালটিং সার্ভিসেস লিমিটেড এবং সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্সেস স্টাডিজ।
[৯] অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্রয় কমিটি’র বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ)-এ সইকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওমান-এর প্রতিষ্ঠান ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড (ওকিউটি)-কে অন্তর্ভুক্ত করার একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।