
ছুটির দিনে বইমেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড়

এস.ইসলাম জয় : [১] একদিন আগেই পর্দা উঠেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলার। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে বইছে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ। মায়ের ভাষার জন্য জীবন বিসর্জন দেওয়া ভাষা সৈনিকদের স্মরণ আর রক্তস্নাত সেই আত্মত্যাগের স্মৃতিকে জাগরূক করে রাখতেই ২৯ দিন ধরে চলবে এই আয়োজন।
[২] এদিকে উদ্বোধনের পরদিন শুক্রবার প্রথম ছুটির দিনেই পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড়ে লোকারণ্য মেলা প্রাঙ্গণ। [৩] সরেজমিনে দেখা যায়, এ বছরের বইমেলায় বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশন অংশের মোট ৮টি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ দিয়ে পাঠক-দর্শনার্থীরা আসা-যাওয়া করতে পারছেন।
[৪] তবে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে একটি বের হওয়ার পথে। বাংলা একাডেমির দিকে বের হওয়ার পথটিকে এবার একটু সরিয়ে রমনা মন্দির গেটের কাছাকাছি নেওয়া হয়েছে। ছুটির দিন হওয়াতে সকাল এগারোটা নাগাদ শুরু হয়েছে বইমেলা। তবে ভিড় বেড়েছে দুপুরের পর থেকে।
[৫] সরেজমিনে আরও দেখা যায়, ছুটির দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলায় টিএসসি সংলগ্ন গেট দিয়েই প্রবেশ করছেন অধিকাংশ মানুষ। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে নারী-পুরুষ আলাদাভাবে ভেতরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তবে শুরুতেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের নিরাপত্তা তল্লাশিতে। মেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বরাবরের মতোই মূল ফটকের সামনে অনুসন্ধান- ঘোষণা বুথ এবং মেলার ম্যাপ রাখা হয়েছে। এরপর ভেতরের দিকে বিস্তৃত হয়েছে প্যাভিলিয়ন, স্টল এবং লিটলম্যাগ। [৬] মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, মানুষের সুবিধার্থে বইমেলা চলাকালীন সময়ে অন্তত শুক্রবার দিন মেট্রোরেল দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত চালু রাখা হোক। এতে করে যাতায়াতে সুবিধা পাবেন সবাই। দূর-দূরান্ত থেকে আসতে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিন্তু ছুটির দিনগুলোতে মেট্রোরেল চালু রাখলে সহজেই বইমেলায় আসা যাবে।
[৭] সোহানুর রহমান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, অমর একুশে বইমেলা আমার কাছে বড় উৎসবের মতো মনে হয়। এখানে না আসলে অনেকটা অপূর্ণতা থেকে যায়। তাই শুরুর দিকেই ঘুরতে এসেছি। এখনো কোনো বই কেনাকাটা করিনি। তবে ভালো লাগলে কিনে নেব। চারপাশের পরিবেশ এবং অনেক বই দেখে খুবই ভালো লাগছে।
[৮] সামিরা ইয়াসমিন তিন্নি নামের আরেক ক্রেতা বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার পরিসর বেশ বড় মনে হচ্ছে। আর বেশ গোছানো। শুরুর দিকেই মেলার আয়োজনও বেশ সমৃদ্ধ।
[৯] অপরদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে দেখা গেছে পুলিশ, ডিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বইমেলার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
[১০] আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে জানানো হয়, মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায?িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র?্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। এছাড়া নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। [১১] প্রসঙ্গত, প্রতিদিন ছুটির দিন ব্যতীত বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ এর পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। আর ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন মেলা চলবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। সূত্র : ঢাকাপোস্ট
