আবারো ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালো গৌতম আদানির সম্পদ
মাসুদ মিয়া : [১] এক বছরের ব্যবধানে গৌতম আদানির সম্পদের বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।
[২] ২০২৩ সালের শুরুতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের করা অভিযোগের পর তাঁর সম্পদের পরিমাণ কমে গেলেও তিনি এক বছরের মধ্যে বেশিরভাগ সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন।
[৩] বুধবার আদানির সম্পদের মূল্য ২.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০০.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে আদানি গ্রুপকে বাজার কারসাজি এবং জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত করার পর থেকে যেটি সর্বোচ্চ।
[৪] আয়ের একটি প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের শেয়ার বুধবারে অষ্টম দিনের মত বেড়েছে এবং এতে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩০ শতাংশ। ব্লুমবার্গ বিলিওনিয়ার ইনডেক্সের তথ্যমতে, তিনি এখন বিশ্বের ১২তম ধনী ব্যক্তি। [৫] কিন্তু আদানি এখনো ২০২২ সালে তাঁর যতটুকু সম্পদ ছিল তা থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঘাটতিতে আছেন। বাসস
[৬] আদানির সম্পদের বাজারমূল্য ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরেও জেফ বেজোসের থেকে বেশি ছিল। কিন্তু জালিয়াতির অভিযোগের কারণে সেপ্টেম্বর থেকে তা কমতে শুরু করে। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আদানির মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৮০ বিলিয়ন ডলার।
[৭] রাজীব জৈনের জিকিউজি পার্টনারস এলএলসি গতবছর আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের পেছনে কাতারের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ এবং টোটালইঞ্জিনিয়ার্স এসই যথাক্রমে ৫০০ মিলিয়ন ডলার এবং ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
[৮] গত বছরের শুরুর দিকে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে আদানি গ্রুপের সম্পদের পতনের পাশাপাশি আদানি তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদের পতন ঠেকাতে পারেননি। ভারতের স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এই বিষয়ে তদন্ত করা শুরু করেছিলো।
[৯] জানুয়ারিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তিন মাসের মধ্যে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিলে আদানি গ্রুপের স্টকের মূল্য আবার দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। আদালত থেকে জানানো হয় নতুন করে আর কোনো তদন্ত করার প্রয়োজন নেই।
[১০] আদানির এই প্রত্যাবর্তনের সাথে ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সম্পর্ক আছে যেহেতু বিশ্বের অনেক দেশ ভারতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ এবং মর্গান স্ট্যানলির মত ব্যাংকগুলো ভারতকে পরবর্তী দশকের জন্য বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
[১১] ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু আদানিকে তুলনা করা হতো ব্যবসার মহারথী জন ডি. রকফেলার এবং কর্নেলিয়াস ভ্যান্ডারবিল্টের সাথে, যারা ১৮০০ শতাব্দীতে আমেরিকার সোনালি যুগে একচেটিয়া ব্যবসা করে অনেক নাম করেছিলেন।
[১২] আদানি হীরার ব্যবসা দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু করলেও ১৯৮৮ সাল থেকে জরুরি পণ্য বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠান ভারতে বন্দর, বিদ্যুৎ, মিডিয়া ও জ্বালানি ব্যবসার সাথে জড়িত।
[১৩] ক্যারিয়ারের শীর্ষে আদানি ১৫০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছিলেন এবং তিনি বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন।
[১৪] ২০২৩ সালে যে কারো থেকে বেশি সম্পদ হারানোর পরও ২০২৪ সালে আদানী ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করেছেন। ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, যেটি বিশ্বের বড় ধনীদের মধ্যে সব থেকে বড় আর্থিক অগ্রগতির একটি।