সোহেল রহমান : [১] অফশোর ঋণের সুদে কর অব্যাহতি সুবিধা নতুন করে আর বাড়ানো হবে না। দেশে ডলারের প্রবাহ বাড়াতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ইতোপূর্বে কর ছাড় সুবিধা চলতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে আগামী ডিসেম্বরের পর অফশোর ঋণের সুদে কর অব্যাহতি সুবিধা থাকছে না।
[২] এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন যে, আমরা তো ট্যাক্স হ্যাভেন হতে পারি না। কারণ আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় আপনারা (যারা অফশোর লোন নেন) প্রস্তুতি নিন। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা একটা ব্রিদিং স্পেস দিয়েছি। এরপর আর এ সুযোগ থাকবে না। সেভাবে নেগোসিয়েশন শুরু করুন।
[৩] একই সঙ্গে অফশোর ঋণের সুদের ওপর আরোপিত চাপ ঋণ গ্রহীতার ওপর চাপানোর জন্য এ পক্ষের নেগোসিয়েশনের দুর্বলতাকে দায়ী করেন তিনি।
[৪] জানা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে জুলাই থেকে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছিল। ফলে নতুন ঋণ গ্রহণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীদের আগ্রহে ভাটা পড়ে। এতে করে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ হ্রাস পায়। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা বিদ্যমান ঋণ পরিশোধের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে থাকলে এতে করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়তে থাকে।
[৫] এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এই কর মূলত অফশোর ব্যাংকিং-এর সুদের ওপর প্রযোজ্য। এর মানে স্থানীয়ভাবে যারা লোন নিচ্ছিলেন, তাদের ওপর এ করহ হার প্রযোজ্য হওয়ার কথা নয়। কিন্তুবিদেশি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো করের এ বাড়তি বোঝা স্থানীয়ভাবে যারা লোন নেন পরোক্ষভাবে তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।
[৬] সূত্রমতে, যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হয়, তাদের প্রায় সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘দ্বৈত কর অব্যাহতি চুক্তি’ রয়েছে। ফলে এখানে ট্যাক্স দিলে তা ওই দেশে দিতে হবে না। কিন্তু এ বিষয়গুলো আমাদের এখান থেকে সঠিকভাবে নেগোশিয়েট করা যায়নি।
[৭] জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে, গত ২০২৩ সালের অক্টোবর শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ১ হাজার ২১৩ কোটি ডলারের বেশি। এর আগে গত জুনের শেষে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৬৬ কোটি মার্কিন ডলার।