বিশ্বজিৎ দত্ত : [১] সাংবাদিক ও সংবাদপত্র কর্মচারীদের কর কে দেবে, নোয়াবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তা ব্যাখ্যা করতে বলেছে আপিল বিভাগ।
[২] আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য আগামী ২১ এপ্রিল আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এ মামলায় নোয়াবকে পক্ষভুক্ত করে রোববার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
[৩] সংবাদপত্রের নবম ওয়েজবোর্ড বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর হাই কোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুজ্জামান।
[৪] ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর ওই রিটের রায়ে সাংবাদিক-কর্মচারীদের আয়কর ও আনুতোষিক সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষকে দিতে বলে হাই কোর্ট।
[৫] ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের একটি আবেদন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়।
[৬] সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। ওই বোর্ড নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ চূড়ান্ত করে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তা তথ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করে। ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করে সরকার। ওই প্রজ্ঞাপনের সপ্তম অধ্যায়ের ৩ নম্বর শর্তে বলা আছে, সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের ওপর আরোপিত আয়কর সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদেয় হবে।
[৭] একই অধ্যায়ের ৭ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, “সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীরা প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ছয় মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ গ্র্যাচুইটি হিসেবে প্রাপ্য হবেন।
[৮] কিন্তু প্রজ্ঞাপনে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, কার্যকরণ ও প্রয়োগ শিরোনামের দ্বাদশ অধ্যায়ের ৪ নম্বর শর্তে মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সাংবাদিক, কর্মচারীরা নিজেদের আয় থেকে আয়কর পরিশোধ করবেন এবং বছরে মূল বেতনের সমান একটি গ্র্যাচুইটি পাবেন। নবম ওয়েজবোর্ডের মন্ত্রিসভা কমিটির এই সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর হাই কোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুজ্জামান।
[৯] ওই রিটটির প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে। রুলে আয়কর ও গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তথ্যসচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
[১০] ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর সে রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওয়ার্দীর হাই কোর্ট বেঞ্চ ওই সুপারিশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।