শহীদ মিনারে গরিব বাচ্চাদের সাজিয়ে গুজিয়ে কি নেয়া হয়েছিল
ফরিদা আখতার
২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা ঢাকায় একটা উৎসব। ফাল্গুনের ৮ তারিখ হলেও ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসা প্রকাশের বিশেষ তারিখ। গানেও ২১শে ফেব্রুয়ারির কথাই আছে। যদিও অড়া আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায় এটা বেশি প্রযোজ্য ছিল। এই দিন পালনের জন্যে রাষ্ট্রীয়, প্রশাসনিক সব ব্যবস্থাই থাকে। বাণিজ্যিক চাষের ফুলের বিক্রি এই সময় অনেক বেড়ে যায়। বলাবাহুল্য বাণিজ্যিক ফুল চাষে ব্যাপকভাবে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। কাজেই এই ফুলের গন্ধ শুঁকতে নাকের কাছে না নেয়াই ভাল। কি পরতে হবে সেই ড্রেসকোড হচ্ছে সাদা শাড়ী কালো পাড়, কালো শাড়ি/ কালো বা সাদা পাঞ্জাবি। এর পরদিনই আবার বসন্তের আনন্দে মেতে উঠবেন সবাই। আমার এতে কোন আপত্তি নাই। বরং দেখতে ভালই লাগে।
গতকাল সারাদিন ফেসবুকে গ্রামে গঞ্জে গরিব ছেলে মেয়েরা নিজেদের উদ্যোগে শহীদ মিনার বানিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তারা সাধারণ কাগজ, কলা গাছের থোর দিয়ে বানিয়েছে। অনেক ফুল না পেলেও কিছু ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দিয়েছে। এই দিনটি তারা যেভাবেই হোক মনে রেখেছে এবং পালন করেছে। শ্রদ্ধ্বায় এই শিশুদের প্রতি আমার মাথা নত হয়ে আসলো । ঢাকায় যারা শহীদ মিনারে গেছে তাদের সাদা বা কালো পঞ্জাবী /শাড়ী পরা ছিল। গ্রামের এই বাচ্চাদের গায়ে কোন বিশেষ কাপড় নাই, কেউ খালি গায়। কিন্তু মুখে হাসিটুকু আছে।
ফেসবুকে যারা কাল পোস্টগুলো দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে আমি কিছু ছবি এখানে ব্যবহার করছি। দেখে শুধু ভাবছি একই দেশে এতো বৈপরীত্ব, বৈষম্য! কেউ পায় কেউ পায় না । আমরা খাদ্য গ্রহণে অসমতা দেখি, কাপড় চোপড়, শিক্ষা, চিকিৎসা দেখি। এই দিনেও? ঢাকায় শহীদ মিনারে গরিব বাচ্চাদের সাজিয়ে গুজিয়ে নেয়ার চেষ্টা কোন সংগঠন করেছে কিনা আমার জানা নাই। যদি করে থাকেন, ধন্যবাদ।