এক কার্যদিবস পর আবারও পতনে শেয়ারবাজার
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার এক কার্যদিবস উত্থানের পর গতকাল বুধবার আবারও দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের পতন হয়েছে টাকার অংকে লেনদেন কমেছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন কমেছে তবে বেড়েছে মূল্যসূচকের পরিমান। [২] গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪.০৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে। যা আগেরদিন বেড়েছিল ১৩.০৯ পয়েন্ট। [৩] এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শেয়ারবাজারে চলছে ধারাবাহিক পতন। আলোচ্য সময়ের মধ্যে ৮ কর্মদিবস পতন হয়েছে। বিপরীতে দুই কর্মদিবস উত্থানের দেখা মিলেছে। এই ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ৮ কর্মদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২০৯ পয়েন্ট। আর দুই কর্মদিবসে সূচক বেড়েছে ৩০ পয়েন্ট। অর্থাৎ সর্বশেষ ১০ কর্মদিবসে শেয়ারবাজারের সূচক খোয়া গেছে ১৭৯ পয়েন্ট।
[৪] এদিকে, গত কয়েক কর্মদিবস যাবত শেয়ারবাজারে নতুন এক ধারার আবির্ভাব ঘটেছে। প্রতিদিন লেনদেনের প্রথম ভাগে উভয় শেয়ারবাজারে সূচকের বড় উত্থান দেখা যায়। কিন্তু শেষ ভাগে সূচক ফের পতনের বৃত্তে এসে স্থান নেয়। আগের দিন মঙ্গলবারও একই রকম দৃশ্যের অবতারণা হয়। ওইদিন লেনদেনের প্রথম ভাগে ২৭ পয়েন্টের বেশি সূচক উঠে যেতে দেখা যায়। তারপর ধীরে ধীরে সূচক নিচে নামতে থাকে। শেষ বেলায় সূচক পতনের বৃত্তেই এসে স্থির হয়।
[৫] গতকাল প্রথম ভাগে ডিএসই-তে ২৭ পয়েন্টের বেশি সূচক বেড়ে লেনদেন হয়। এই সময়ে লেনদেনের গতিও ভালো দেখা যায়। কিন্তু বেলা ১১টার পর সূচক সংশোধন হতে থাকে। এক পর্যায়ে সূচক রেডজোনে ঢুকে যায়। তারপর ১২টার দিকে সূচক আবার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় মোড় নেয়। কিন্তু বেশি দূর এগুতে পারেনি। আধা ঘন্টার মধ্যে সূচক আবারও রেডজোনে টার্ন নেয়। যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
[৬] সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, বাজারের লেনদেন দেখে মনে হচ্ছে বড় বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার সংগৃহ করার কৌশলে নেমেছেন। যে কারণে সূচক দেখার মতো কিছুটা বাড়লেই তারা সেল প্রেসার দিয়ে উত্থান থামিয়ে দেয়। আবার সূচক বেশি নামতে থাকলে তারা বাই প্রেসার দিয়ে পতনও থামিয়ে দেয়। ফলে কিছুদিন যাবত বাজার সাইড লাইনে চলছে। তবে বাজারে যে নতুন স্মার্ট মানি ঢুকছে, তা স্পষ্ঠ বুঝা যায়। তাদের মতে, বাজার এখান থেকেই শক্তি সঞ্চয় করে ওপরের দিকে ধাবিত হবে।
[৭] গতকাল ডিএসইতে ৮৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার পরিমাণ আগের দিন হয়েছিল ৮৯৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার।
[৮] এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৬ টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৪৫ টি বা ৩৬.৬১ শতাংশের। আর দর কমেছে ১৭৭ টি বা ৪৪.৬৯ শতাংশের ও দর পরিবর্তন হয়নি ৭৪ টি বা ১৮.৬৮ শতাংশ
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-সেন্ট্রা লফার্মা, বেস্ট হোল্ডিংস, ফু-ওয়াংসিরামিক, মুন্নু ফেব্রিক্স, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ,ফু-ওয়াংফুডস, তৌফিকাফুডস, ওরিয়নইনফিউশন,অ্যাক্টিভফাইন ও রবিআজিহাটা।
[৯]দর বৃদ্ধিও শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:এনআরবি ব্যাংক, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, আনলি মাইয়ার্ন, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, এসইএমএলএফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, হাইডেল বার্গসিমেন্ট, অ্যাক্টিভফাইন ও মুন্নু ফেব্রিক্স।
[১০] দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, মিথুন নিটিং, বেস্ট হোল্ডিংস, আইসিবি সোনালী ব্যাংক ফার্স্টমিঃফাঃ, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, সানলাইফইন্স্যুরেন্স, তাল্লুস্পিনিং, এসবিএসিব্যাংক, আফতাবঅটোমোবাইল ও শাহজালালইসলামিব্যাংক।
[১১] অপরদিকে সিএসইতে ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭১ টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১০৫ টির, কমেছে ১২২ টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৪ টির। এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮.১০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৯৪৫ পয়েন্টে।