সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে পতন হলেও ডিএসইর লেনদেন বেড়ে ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসই দরপতন হলো। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় দ্বিগুণ। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। [২] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। অবশ্য ডিএসই’র মতো সিএসইতেও লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। [৩] এর আগে টানা সাত কার্যদিবসে পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৯০ পয়েন্ট কমে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সূচক ১৭ পয়েন্ট বাড়ে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আবার সূচকের পতন হয়। সোমবার পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি।
এরপর মঙ্গলবার সূচক উত্থান হলেও বুধবার আবারও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এ পরিস্থিতিতে [৪] গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনর এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে প্রথম আধা ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। [৫]দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় এই প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। [৬] দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৮টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৪টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। [৭] ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯১৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ৪৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৯ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবি ব্যাংক।
[৮]এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং সিরামিক, সোনালী পেপার, মুন্নু ফেব্রিক্স, বেস্ট হোল্ডিং, ফরচুন সুজ, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম এবং সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো: ফাইনফুডস, কাট্টালী টেক্সটাইল, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, সেন্ট্রাল ফার্মা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ভিএফএস থ্রেড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, কুইন সাউথ টেক্সটাইল ও এইচ আর টেক্সটাইল।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-প্রাইমফাইন্যান্স ফার্স্টমিঃফাঃ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, মনোস্পুল পেপার, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, পেপার প্রসেসিং, নাভানা সিএনজি, আরামিটসিমেন্ট, জেমিনী সী ফুড, নূরানীডাইং ও আইটিসি।
[৯] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৯টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।