সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর বুধবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী দেখা মিললেও গতকাল বৃহস্পতিবার আবার দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় আট গুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এদিন গড় সব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর গ্রামীণফোন ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার দামে বড় পতন হওয়ার পর বুধবার কিছুটা দাম বাড়ে। তবে গতকাল আবার কোম্পানি দুটির শেয়ার দামে কমেছে।
[২] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। [৩] এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজার মন্দার মধ্যে রয়েছে। তবে মাঝে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখে গেলেও সার্বিকভাবে বাজার পতনের মধ্যে রয়েছে। অধিকাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসানের মধ্যে রয়েছেন।
[৪] গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক চার পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকেনি। বরং লেনদেনের শেষদিকে ঢালাও দরপতন হয়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৪৬টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১১২ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় সাত পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। [৫] ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭০৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ফু-ওয়াং সিরামিকসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ২৮ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
[৬] এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মুন্নু ফেব্রিক্স, গোল্ডেন সন, ফরচুন সুজ, আফতাব অটোমোবাইল, বেস্ট হোল্ডিং, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:এশিয়াটিক লেব্রেটোরিজ, বীকন ফার্মা, গোল্ডেনসন,ফাইনফুডস, এটলাস বাংলাদেশ, আনলিমাইয়ার্ন, স্যান্ডার্ড ব্যাংক, সিকদার ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্সওয়ানমিঃফাঃ ও প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:- সেন্ট্রাল ফার্মা, মুন্নু ফেব্রিক্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম,খুলনা প্রিন্টিং, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট,এসইএমএল লেকচারইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, অলিম্পিক এক্সেসোরিজ, আফতাব অটোমোবাইলস, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও জিএসপিফাইন্যান্স।
[৭] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭০টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা।