আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণে ব্যয় বাড়ছে ৪৮৬ কোটি টাকা
সোহেল রহমান : [১] রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল গত ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। সাড়ে তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ।
[২] স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মূল প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সম্প্রতি প্রকল্প ব্যয় প্রায় ৬২ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বশেষ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে ব্যয় বাড়ছে ৪৮৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন-এর অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে মাত্র ২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১ হাজার ২৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে সরকার। মূল প্রকল্পে পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের কথা ছিল।
[৩] সূত্র জানায়, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ অনুযায়ী প্রকল্পে কিছু নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি; বিশ্ববাজারে বিভিন্ন ভারী/হালকা যান/যন্ত্রপাতির বাজার দর এবং ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি; অবশিষ্ট ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রাক্কলন সংশোধন ইত্যাদি কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।
[৪] স্থানীয় সরকার বিভাগ জানায়, প্রকল্প এলাকা হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন-এর আওতাধীন আমিন বাজার এলাকা। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভূমির উপর চাপ কমানো; পরিবেশ বান্ধব ও মানসম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ এবং পরিবহন ও নিরাপদে নির্দিষ্ট স্থানে অপসারণের ব্যবস্থাকরণ; বর্জ্য হতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনা; বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করে সম্পদে রূপান্তর করার লক্ষ্যে ইনসেনারেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করা; রির্সোস রিকভারি সুবিধা স্থাপনের মাধ্যমে ল্যান্ডফিলে বর্জ্যের পরিমান কমিয়ে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা ইত্যাদি।
[৫] সূত্র মতে, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নাগরিকদের জন্য নগর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এমতাবস্থায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন তথা ইনসিনারেশন-এর মাধ্যমে ভূমির ওপর চাপ কমানো সম্ভব হবে। এছাড়া, পরিবেশবান্ধব ও মানসম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন ও নিরাপদ স্থানে ডিসপোজাল-এর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনাসহ এবং রিসোর্স রিকভারী সুবিধা স্থাপনের মাধ্যমে ল্যান্ডফিলে বর্জ্যরে পরিমাণ কমিয়ে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।
[৬] প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ৮০ একর ভূমি অধিগ্রহণ; ভূমি উন্নয়ন; বাঁধ, রাস্তা, ড্রেন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ; ডেব্রিজ, ই-ওয়েস্ট ও কংক্রিটের ইয়ার্ড উন্নয়ন; ৫টি ফ্লাড টাওয়ার লাইট, ৩টি হাইড্রলিক এক্সকেভেটর, ৬টি বুলডোজার, চেইন ডোজার ও ২টি লং আর্ম এক্সকেভেটর ক্রয়।