বৈশ্বিক প্রযুক্তি নেতা, গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা
ড. ইকবাল আহমেদ : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিশ্বব্যাপী শিল্প ও সমাজের পুনর্নির্মাণের প্রযুক্তিগত ভিত্তি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রোপটে, একটি সমদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ, এআইয়ের একীভূতকরণ নিছক একটি ভবিষ্যৎ ধারণা নয় বরং বর্তমান সময়ের বাস্তবতা। জাতি যখন বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির মানচিত্রে নিজেকে অবস্থান করার চেষ্টা করছে, তখন এআই বৈশিষ্ট্য, প্রযুক্তির উত্থান অভূতপূর্ব সুযোগ ও অনন্য চ্যালেঞ্জ উভয়ই উপস্থাপন করে। বাংলাদেশে এআই-এর ল্যান্ডস্কেপ বিভিন্ন সেক্টর জুড়ে উদ্ভাবনী অ্যাপ্লিকেশনের ব”দ্ধি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ত্রেগুলোর মধ্যে একটি হলো স্বাস্থ্যসেবা, যেখানে এআই রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা পরিকল্পনা ও রোগীর যত্নে বিপ্লব ঘটা”েছ। মেডিক্যাল ইমেজিং-এ এআই অ্যালগরিদম স্থাপনের ফলে রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা উল্লেখযোগ্যভাবে ব”দ্ধি পেয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের দ্রুত জ্ঞাত সিদ্ধান্ত নিতে সম করে।
শিা খাত আরেকটি ডোমেইন যেখানে এআই তরঙ্গ তৈরি করছে। এআই অ্যালগরিদম দ্বারা চালিত অভিযোজিত শিার প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যক্তিগতকৃত ও কার্যকর শেখার অভিজ্ঞতার প্রচার করে, প”থক ছাত্রদের প্রয়োজন অনুসারে শিামূলক বিষয়বস্থ তৈরি করে। এই পদ্ধতিটি শুধুমাত্র শিাগত ফলাফলকেই উন্নত করে না বরং বাংলাদেশের মতো সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় একটি দেশে প্রচলিত বৈচিত্র্যময় শিার শৈলীকেও সম্বোধন করে। ব্যবসায়িক েেত্র এআই অপারেশনগুলোকে স্ট্রিমলাইন করছে, দতার উন্নতি করছে ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করছে। সাপ্লাই চেইন অপ্টিমাইজেশন থেকে শুরু করে কাস্টমার সার্ভিস অটোমেশন পর্যন্ত কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতামূলক অগ্রগতি অর্জনের জন্য এআই ব্যবহার করছে। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং দ্বারা চালিত চ্যাটবটগুলোর একীকরণ গ্রাহকের মিথস্ক্রিয়াকে উন্নত করছে ও ব্যবসায়িকদের ভোক্তাদের আচরণে মূল্যবান অন্তর্দ”ষ্টি প্রদান করছে।
বাংলাদেশে এআই এর উত্থান আশাবাদের তরঙ্গ নিয়ে আসে। এই প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসে তা স্বীকার করা অপরিহার্য। প্রাথমিক বাধাগুলোর মধ্যে একটি হলো এআই সিস্টেমের বিকাশ, বাস্তবায়ন ও রণাবেণ করতে সম একটি দ জনবলের প্রয়োজন। দতার ব্যবধান পূরণের জন্য শিা প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি খাত থেকে এআই-কেন্দ্রিক প্রশিণ কর্মসূচিতে বিনিয়োগের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। কিš’ এআই ব্যবহারের নৈতিক প্রভাবকে উপো করা যায় না। যেহেতু এআই সিস্টেমগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলোকে প্রভাবিত করে তাই পপাতিত্ব, জবাবদিহিতা ও স্ব”ছতা সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো সর্বাপো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। উদ্ভাবন ও নৈতিক বিবেচনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এআই বিদ্যমান বৈষম্যকে শক্তিশালী না করে সমগ্র সমাজকে উপকৃত করে।
অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা বাংলাদেশে এআই এর ব্যাপক গ্রহণের েেত্র আরেকটি চ্যালেঞ্জ। উ”চ-গতির ইন্টারনেটে অ্যাক্সেস, নির্বিঘ্ন এআই অপারেশনের জন্য একটি পূর্বশর্ত যা সারা দেশে অসম রয়ে গেছে। এই ডিজিটাল বিভাজন মোকাবেলা করার জন্য ব্রডব্যান্ড অবকাঠামোতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে এআই এর সুবিধাগুলো জনসংখ্যার সমস্ত অংশে পৌঁছেছে। তথ্য গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ বাংলাদেশে এআই ল্যান্ডস্কেপে জটিলতার আরেকটি স্তর যোগ করে। যেহেতু এআই সিস্টেমগুলো প্রশিণ ও অপারেশনের জন্য প্রচুর পরিমাণে ডেটার উপর নির্ভর করে, তাই সংবেদনশীল তথ্য সুরতি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হয়ে ওঠে। এআই প্রযুক্তির প্রতি আস্থা তৈরির জন্য শক্তিশালী ডেটা সুরা প্রবিধান প্রতিষ্ঠা করা ও সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা অপরিহার্য। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বাংলাদেশ সরকার এআই-এর রূপান্তরমূলক সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ও একটি সম পরিবেশ তৈরি করতে সক্রিয় পদপে নি”েছ। ন্যাশনাল এআই স্ট্র্যাটেজির মতো উদ্যোগের ল্য গবেষণার প্রচার করা, উন্নয়ন, একাডেমিয়া ও শিল্পের মধ্যে সহযোগিতা ব”দ্ধি, একটি দ এআই কর্মশক্তি গড়ে তোলা।
বাংলাদেশে এআই অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৈশ্বিক প্রযুক্তি নেতা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়া জ্ঞান বিনিময়, আধুনিক প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেস ও আর্থিক সহায়তার সুবিধা দেয়। এই অংশীদারিত্ব শুধু দেশের প্রযুক্তিগত সমতাকেই চালিত করে না বরং বাংলাদেশকে বৈশ্বিক এআই ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অবস্থান করে। উপসংহারে, বাংলাদেশে এআই বৈশিষ্ট্য, প্রযুক্তির উত্থান দেশটি কীভাবে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায় তার একটি দষ্টান্ত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এআই এর পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর যাত্রা চ্যালেঞ্জ দ্বারা চিহ্নিত। কিন্তু একটি কৌশলগত ও সহযোগিতামূলক পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশ এই বাধাগুলোকে নেভিগেট করতে পারে। এআই ল্যান্ডস্কেপে অগ্রগামী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। জাতি যখন এই পথে হাঁটছে তখন ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির সঙ্গে ঐতিহ্যগত মূল্যবোধের সংমিশ্রণে এআই গ্রহণের একটি অনন্য বাংলাদেশ মডেল তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক, নৈতিক ও ডিজিটাল যুগে টেকসই বদ্ধির জন্য প্রস্থত।
লেখক: অধ্যাপক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। অনুবাদ : জান্নাতুল ফেরদৌস। সূত্র : ডেইলি সান