বর্তমান বিশ্বযুদ্ধে অর্থনীতি ও প্রযুক্তিকে মূখ্য হিসাবে দেখা হয়
ওয়াসী মাহিন
বিশ্বে চলছে স্বাধীনতা ও সক্ষমতার যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ধরনে বেশ পরিবর্তন দেখা যায়। এই ধরুন কয়েক দশক আগের তারকা যুদ্ধ নিয়ে মাতামাতি এখন তেমন নেই। কে আগে মহাকাশে গেল, কে চন্দ্র বিজয় করল, কে চন্দ্রে মানুষ পাঠালো এসব নিয়ে টানটান উত্তেজনা নেই। আবার কে কোবাল্ট ৬০ দিয়ে দুনিয়া বিধ্বংসী থার্মো নিউক্লিয়ার বোম্ব তৈরিতে এগিয়ে সেগুলাও এখন অতটা মূখ্য মনে হয়না। কার বহরে কতটা পারমানবিক ওয়ারহেড আছে, কার বহরের সাবমেরিন কয়টা অথবা বিমানবাহী নৌবহর কতটা সেই হিসাবো দিনে দিনে গৌন হয়ে পড়ছে।
বর্তমান বিশ্বযুদ্ধের ধরনে অর্থনীতি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে মূখ্য হিসাবে বিবেচনার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রভাব বলয়ে সামরিক জোট গঠনের গুরুত্ব কমে এখন বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠছে অর্থনৈতিক জোট। এই যুদ্ধের অস্ত্র হল মানুষের মননের দখল নেয়া, অদৃশ্য জীবনমানের চক্রে ফেলে নির্ভরশীলতার চূড়ান্তে পৌছে দেয়া। ব্যক্তি তথা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সিদ্ধান্তের পেছনে অদৃশ্য প্রভাব বজায় রাখা।
এই ধরুন ৩০ মিনিট ফেসবুক নেই। ইউটিউব নেই। সারাবিশ্ব যেন থমকে যায়। সময়ের গতি কমে যায়। মানসিক অস্থিরতা চুড়ান্তে পৌছে যায়। জীবনের একটি অংশ এখন বাস্তবিক আরেকটি অংশ এখন অন্তর্জালের জালের ভেতর ছটফট করা কিছু শিকার।
এর সবটা খারাপ সেটা নয়। তবে সবটা খারাপ হলে তো কেউ আর সাদরে গ্রহণ করেনা বরং বর্জন করে। ভাল দিক খুজতে গিয়েই ভাল আর খারাপ মিলে মিশে এমন এক যৌগ গঠিত হয় যেখানে ভাল বা মন্দকে আলাদা ভাবে চিনবার সক্ষমতাও লোপ পায়। এরকম অস্ত্রকে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে থার্মোনিউক্লিয়ার বোম্ব ব্যবহার করে ইতিহাসে খলনায়ক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকেনা। অতি সহজে মানবতা আর মুক্তির কথা আওড়িয়ে আরব বসন্তের মত অনেক বসন্তকাল শীত কালে রুপান্তর করা সম্ভব। গ্রীষ্মকে বানানো সম্ভব শরতের এই রোদ এই বৃষ্টির কাব্যে।
যুদ্ধের উপকরন সৈন্যবহর ও সামরিক সক্ষমতা। আর সেটাকে দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে নিতে লাগে রসদ তথা টাকা। বর্তমানে যেই যুদ্ধ চলছে সেটাকে বলা চলে প্রযুক্তির যুদ্ধ। আর আর পেছনেও প্রয়োজন হয় টাকার। তবে এই যুদ্ধে সফলতা বা বিফলতায় বামপন্থী, উগ্রবাদী, মানবতাবিরোধী ইত্যাদি উপাধির পরিবর্তে আসে মানবকল্যানের প্রশ্ন।
প্রযুক্তি সভ্যতার অন্যতম বিকাশযন্ত্র। তবে এটাকে নিয়ন্ত্রন নেয়ার মাধ্যমে এবং অন্যকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে অন্যকে নিয়ন্ত্রন করার সক্ষমতা হল এই যুদ্ধ। মানুষ প্রযুক্তিতে এতটাই বুঁদ হয়ে আছে যে, শত্রুর প্রযুক্তি আগপাছ ভাববার সময় নেই। সার্ভিস বন্ধ হলেও শুরু হয় অরাজকতা। আর এজন্যই প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রনে শত্রুদেশকে নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা পাওয়া যায়।
এত কথা বলার কারণ নিয়ে এবার কিছু বলা যাক। গত বছর আগস্টে ইউএস কমার্স সেক্রেটারি জিনা রেইমান্ডোস চীন ভিজিট করে। বিগত কয়েক বছর ধরেই চীনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে আমেরিকার। হুয়াওয়ের মত অনেক চীনা কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমেরিকা চাইনিজ কোম্পানিগুলিকে বিশ্বের সাথে তাল মেলানোর মত আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিতে বাধা সৃষ্টি করে রাখে। এসব অনেক ইস্যু নিয়েই মিসেস জিনা রেইমান্ডোস চীনের সাথে আলোচনা করতে আসেন। কিন্তু আলোচনা খুব বেশি ফলপ্রসূ হয়নি যেটা তার বক্তব্যে পরবর্তীতে স্পষ্ট হয়। তিনি পরিস্কার জানান, ইউএস ন্যাশনাল ইন্টারেস্টের প্রশ্নে কোন প্রকার নেগোসিয়েশনের সুযোগ নেই।
তার বিদায়ের পরেই ঘটে আমেরিকার টনক নড়া। হুওয়াওয়ে বড় কোন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান ছাড়াই উদ্বোধন করে তাদের ফ্লাগশিপ ফোন মেট ৬০ প্রো। অনলাইনে ছাড়ার এক ঘন্টার মধ্যেই সবগুলি ইউনিট ব্রিক্রি হয়ে যায়। এর কারণ চীন বাজারে মেট সিরিজের ফোন বাজারে আনতে পেরেছিল চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ধারণা করা হয় মূলত এটা আমেরিকার জন্য একটা বার্তা ছিল এবং এটাও জানান দেয়া হচ্ছিল যে চীন যে কোন মূল্যে প্রযুক্তিতে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে।
এরপরের কাহিনী আপনাদের অনেকের জানা। পুরো বিশ্ব মিডিয়ায় তান্ডব চলে মেট ৬০ প্রো নিয়ে। আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে এর প্রসেসর চিপ হুয়াওয়ের হাইসিলিকন কিরিন ৯০০০এস নিয়ে। এই প্রসেসরটির ফাউন্ড্রি ছিল চীনের নিজস্ব এসএমআইসি। সেটাও সমস্যা না। উদ্বেগের মূল কারণ হল প্রসেসর চিপটি ছিল স্পষ্ট হুয়াওয়ের হাইসিলিকনের নকশা করা। ৭ ন্যানোমিটার ট্রাঞ্জিস্টরের। ট্রাঞ্জিস্টরের আকার যত ছোট হবে এর কম্পিউটিং সক্ষমতা তত বৃদ্ধি পেতে পারে। আর এটাই আমেরিকার সবথেকে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রথমত চিপ ফাউন্ড্রির জন্য যেই মেশিন ব্যবহার হয় সেটা দুনিয়াতে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান বানায়। আমেরিকার প্রযুক্তিতে ডাচ ফার্ম এএসএমএল। এই ফার্মের লিথোগ্রাফির জন্য বর্তমানে ৩ ন্যানোমিটার সক্ষমতার মেশিন বানাতে পারে। তাইওয়ানের টিএসএমসি এক্ষেত্রে ফাউন্ড্রি হিসাবে নেতৃত্বের আসনে। আইফোনেও এখন ৩ ন্যানোর ট্রাঞ্জিস্টরের চিপ।
চিপ ফাউন্ড্রির জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যেই ইকুইপমেন্ট টি দরকার সেটি হল এক্সট্রিম আল্ট্রা লিথগ্রাফি মেশিন বা ইইউভি। এই মেশিনের কাজ হল চিপে ৩ ন্যানোমিটার পর্যন্তও নকশা ইনগ্রেভ করা। যেহেতু বিশ্বে ৩ ন্যানোমিটার সুক্ষ্মতায় চিপ নকশা প্রিন্ট করার মেশিন বানায় একটি মাত্র কোম্পানি যেটা ডাচ একটা ফার্ম অঝগখ এবং সেটা মার্কিন প্রযুক্তির। একারনেই কখনো অঝগখ চীনে ইইউভি মেশিন রপ্তানির পারমিশন পায়নি। এর পরিবর্তে অঝগখ ডিপ আল্ট্রা লেথোগ্রাফি মেশিন রপ্তানি করতে পারে। এটা পুরাতন টেকনোলজি। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে কেউ যেন একটা নির্দিষ্ট স্টেজের বেশি এডভান্স কোন সক্ষমতা না পায় যেটা আমেরিকার জন্য হুমকিস্বরূপ।
চীন যে কাজটি করেছে বলে পশ্চিমারা ধারণা করছে সেটি হল, এই ডিইউভি মেশিন ব্যবহার করেই তারা সিলিকন চিপের উপর আরো সুক্ষ্মতায় প্রিন্ট করতে ব্যাবহার করেছে। তবে এক্ষেত্রে প্রডাকশন বাল্ক এমাউন্টে সম্ভব হবে না এবং খরচ ও বেশি হবে।
আমেরিকার হিসাব খুব পরিস্কার। আমেরিকার বিপক্ষ শক্তিকে প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় অবশ্যই এক বা একাধিক স্টেজ/প্রজন্ম পিছিয়ে থাকা নিশ্চিত করতে হবে। আমেরিকার লক্ষ ছিল চীনের লিথোগ্রাফির সক্ষমতা ১৪ ন্যানোমিটারের মধ্যে রাখতে। এতে করে হাল বাজারের চাহিদা থেকে চীনকে অন্তত ৭ বছর পিছিয়ে রাখা সম্ভব। এই উদ্দেশ্যে এডভান্সড প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করতে যা যা প্রয়োজন সেই সকল বিষয়েই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যদিও ইউএস এক্সপোর্ট কন্ট্রোলের উদ্দেশ্য ছিল চীনের সেমিকন্ডাক্টর ক্যাপাবিলিটি হাল প্রযুক্তি থেকে অন্তত ৮-১০ বছর পিছয়ে রাখতে থেকে। হুয়াওয়ের কিরিন ৯০০০ সিরিজ সক্ষমতার বিচারে সেই ব্যবধান মাত্র ৫ বছরে নিয়ে এসেছে।
শুধুযে প্রসেসরের বিষয় তা নয়। ইউএস টেক জায়ান্ট এসভিআইডিআইএ এখন তাদের বড় হুমকি হিসাবে দেখছে হুয়াওয়েকে। এর কারণ হল মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় কোম্পানিটি বিশ্বের সবথেকে বড় মার্কেট হিসাবে চিনের বাজারে এক্সেস হরিয়েছে। এতে তাদের নতুন গবেষণা করার সক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে চীনের বাজারে এআই ভিত্তিক জিপিইউ হিসাবে পূর্ন সক্ষমতার এ৮০০ এর সরবরাহ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসভিআইডিআইএ’র ডাটা সেন্টার কম্পিউটিং এর জন্য এ১০০ জিপিইউ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এখানে বিকল্প হিসাবে হুয়াওয়ে ৭ ন্যানোমিটার প্রসেসের নতুন অঝঈঊঘউ ৯১০ই জিপিইউ নিয়ে এসেছে যেটা তাদের নিজস্ব নকশায় প্রস্তুত করা এবং এনভিডিয়ার আশঙ্কা অনুযায়ী এটা অ১০০ এর সমকক্ষ প্রায়। এদিকে হুয়াওয়ের কিরিন ৯০০৬সি কে বলা হচ্ছে এপলের এম১’র প্রতিপক্ষ। এটা ৫ ন্যানোমিটার প্রসেসের। যদিও এটা নিশ্চিত এর ফাউন্ড্রি ঝগওঈ না। এসএমআইসি বাদেও চীনে ফাউন্ড্রির সংখ্যা আরো আছে। চীন এই খাতে তাদের বিনিয়োগ খুব দ্রুত বাড়াচ্ছে। উদ্দেশ্য টেক সুপ্রিমেসিতে পিছিয়ে না থাকা।
সম্প্রতি সিপিইউ বেঞ্চমার্কে হাইসিলিকন তাইসান ভি-১২০ সিঙ্গেল কোর পারফরম্যান্সে কোয়ালকমের তৃতীয় প্রজন্মের সিপিইউ এর সমান সক্ষমতা দেখিয়েছে।
বিকল্প হিসাবেও চীন বেশ কিছু কাজ করেছে। বিশেষ করে ওপেন সোর্স চীপের ক্ষেত্রে। চীনের পৃষ্ঠপোষকতায় ওপেন সোর্স চিপ ডিজাইন টেকনোলজি আরআইএসসি-ভি এর কারনে আমেরিকার চিপ ডিজাইন কন্ট্রোল মেকানিজম খুব সুবিধা করতে পারছে না। তবে আমেরিকাও বসে নেই। জো বাইডেন প্রশাসনের সময় মার্কিন গ্লোবাল ফাউন্ড্রিকে চিপস এক্টের অধীনে ৩.১ বিলিয়ন ডলার সাবসিডি দেয়া হয়েছে। এই খাতে বিশাল বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
কগনিটিভ যুদ্ধের এই সূচনায় শুধু যে চীন বা আমেরিকা জড়িত তেমন নয়। ভারত নিজেরাও উপলব্ধি করছে যে এই সক্ষমতায় ভারতের পিছয়ে থাকবার সুযোগ নেই। আর এজন্যই মোদি সরকার ভারতের নিজস্ব চিপ প্রস্তুতির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আপাতত ইজরায়েলের টাওয়ার সেমিকন্ডাক্টর লি: (টিএসএল) ভারতে সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলবে। এছাড়া ভারতের টাটা কোম্পানি ইতোমধ্যে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে এই খাতে বেশ এগিয়ে গিয়েছে। বছর খানেকের ভেতর উৎপাদনে আসতে পারে তারা। তাইওয়ানের সাথে যৌথভাবে করা টাটার প্লান্টে মূলত ৪০ ন্যানোমিটারের চিপ উৎপাদন করা হবে। এই ধরনের চিপ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও হোম এপ্লায়েন্সে ব্যবহার হয়। এমনকি সামরিক বিভিন্ন ইকুইপমেন্টেও এর ব্যবহার আছে।
জাপান নড়ে চড়ে বসেছে। তারা চাইছে এআই-তে তারা বিশ্বে লিডারের ভূমিকায় যেতে চায়।
যাহোক, চীন যে শুধুমাত্র সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে পড়ে আছে এমনটা নয়। চিপ ভিত্তিক ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার কাজে বিনিয়োগ করছে। চীনা কোম্পানিগুলি নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ও সাপোর্টিং ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে।
ফিনান্সিয়াল খাতেও সুইফট এর বিকল্প সিস্টেম গড়ে তুলছে রাশিয়া ও চীন। চীনের কেন্দ্রিয় ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি নিয়ে কাজ করছে। আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে হয়ত অর্থনৈতিক জোট হিসাবে ব্রিকস নতুন ও চমৎকপ্রদ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
মূল কথা হল, আমেরিকার যুক্তি, যখন মার্কিন স্বার্থ জড়িত তখন সেখানে নেগোসিয়েশনের সুযোগ নেই। সেটা সেমিকন্ডাক্টরের নন মিলিটারি ব্যবহার হলেও। চীনের দাবি আমেরিকা চাইছে চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি থামিয়ে দিতে এজন্যউ উচ্চ প্রযুক্তিতে চীনের এক্সেস কমিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। তবে মোদ্দা কথা হল, প্রযুক্তি ছাড়া আধুনিক সভ্যতা অচল। আর এজন্য এই প্রযুক্তির একপাক্ষিক নিয়ন্ত্রন চেষ্টা নির্দিষ্ট দেশকে বিনা কষ্টে অন্যদেশের উপর কর্তৃত্বের সুযোগ দেয়। আর এজন্যই উচ্চ প্রযুক্তিতে সব দেশের ন্যায্য এক্সেস থাকা উচিত। গ্রিনব্যাকের সামরিক ব্যবহার গ্রিনব্যাককে যথেষ্ট ভুগিয়েছে এবং সামনেও ভোগাবে। হতে পারে নিষেধাজ্ঞাকে পাশকাটিয়ে বিশ্ব টেকনলোজির ন্যায্য স্বাধীনতার নতুন অধ্যায় রচনা করবে।