ডিএসইতে লেনদেন কমে ৫০০ কোটি টাকার নিচে টানা পতনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিস রোববারও দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন যে পরিমাণ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে তার ৩ গুণের বেশি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। ধারাবাহিক পতনের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শেয়ারবাজাওে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৫০০ কোটি টাকার নিচে হয়েছে।
[২] আগের দিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) সূচক কমেছিল ৫৩ পয়েন্টের বেশি। ডিএসইর কারিগরি ক্রুটির কারণে গতকাল কতো পয়েন্ট সূচক কমেছে, তা জানা যায়নি। তবে সকাল ১০টায় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হয়। তখন থেকেই ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য দেখানো শুরু হয়। দিনের শেষে ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫ হাজার ৯৭১ পয়েন্ট বা ৯৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে দেখাচ্ছে। এর আগে টানা পাঁচ দিন পতনের পর গত বুধবার ৩৫ পয়েন্ট সূচক বেড়েছিল। এতে লোকসানে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু পরের দিন বৃহস্পতিবার তাদের সেই আশা দুরাশায় পরিণত হয়। সেদিন বড় পতন ঘটিয়ে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা আরও গভীর করে তোলে।
[৩] তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। তারপর থেকে চলতে থাকে ধারাবাহিক পতন। এরমধ্যে অতিবাহিত হয় ১৮ কর্মদিবস। এই ১৮ কর্মদিবসের মধ্যে মাত্র তিন কর্মদিবস ডিএসইর সূচক ইতিবাচক থাকে। বাকি ১৫ কর্মদিবসই থাকে নেতিবাচক প্রবণতায়। তারমধ্যে অন্তত ৪-৫ দিন দেখা যায় আতঙ্ক ছড়ানো সূচকের পতন।
[৪] গতকাল লেনদেনের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। যদি কারিগরি ত্রুটির কারণে ডিএসইর প্রকৃত অবস্থা বুঝা যাচ্ছিল না। তারপরও এটা বুঝা যাচ্ছিল বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ইতিবাচক প্রবণতায় রয়েছে। কিন্তু সময় যতই অতিবাহিত হচ্ছিল, বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা ঝেঁকে বসছিল। বিশেষে করে শীর্ষ মূলধনী কোম্পানি বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকো ও গ্রামীণফোনের শেয়ারে চলছিল থেমে থেমে সেল প্রেসার। কোনভাবেই কোম্পানি দুটির শেয়ার সামনে এগুতে পারছিল না। ওই দুই কোম্পানির সেল প্রেসারেই বাজার নেতিবাচক প্রবণতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি। গতকাল ডিএসইতে ৪৭৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭০৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার।
[৫] ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ২৬১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১১ কোটি ৫১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ২০ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সিএসইতে ২৩৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৪টির, কমেছে ১৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টি প্রতিষ্ঠানের। [৬] আগের দিন সিএসইতে ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৪৪টির, কমেছিল ১৭০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২টি প্রতিষ্ঠানের।