গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখার যে বিপদ হতে পারে
কল্লোল মোস্তফা
রপ্তানির সুযোগ রেখে বিদেশী কোম্পানির সাথে প্রডাকশন শেয়ারিং এর মাধ্যমে সাগরের তেল-গ্যাস উত্তোলনের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করেছে সরকার।
রপ্তানির সুযোগ রাখার বিপদ হলো- যদি এক সাথে একাধিক গ্যাস ব্লকে বড় মজুদের গ্যাস পাওয়া যায় তাহলে বিদেশী কোম্পানি এক সাথে অনেক বেশি গ্যাস উত্তোলন করতে চাইবে তার বিনিয়োগের অর্থ দ্রুত তুলে ফেলবার জন্য।
দেশে এখন গ্যাস সংকট চললেও এক সাথে বড় মজুদের একাধিক গ্যাস ব্লক থেকে বেশি পরিমাণে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলে দেশে সেই গ্যাসের সবটুকু ব্যবহার সম্ভব হবে না। ফলে বিদেশী কোম্পানি তখন গ্যাস রপ্তানি করতে শুরু করবে।
তাছাড়া এলএনজি আমদানিরও একাধিক দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছে সরকার। ফলে এরকম একটা অদভুত পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে যখন, একদিকে দেশের গ্যাস বিদেশে রপ্তানি হবে, অন্যদিকে বিদেশ থেকে এলএনজি আকারে গ্যাস আমদানি হতে থাকবে।
অথচ প্রডাকশান শেয়ারিং এর বদলে বিদেশী কোম্পানিকে প্রয়োজনে কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজে লাগিয়ে গ্যাস উত্তোলন করার উদ্যোগ নিলে এভাবে রপ্তানির সুযোগ রাখার দরকার হতো না। নিজেদের গ্যাস নিজেদের প্রয়োজন মতো তোলার সুযোগ থাকতো।
উল্ল্যেখ্য, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ না নেয়া হলেও প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভারতের কৃষ্ণা গোদাবরী বেসিন থেকে ঠিকই নিজস্ব সক্ষমতায় তেল-গ্যাস উত্তোলন করছে। ভারতীয় ওএনজিসি এমনকি বাংলাদেশের সাগরেও অনুসন্ধান করছে। শুধু পারে না বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান।
অবশ্য যখন বড় কোন সংকট সমাধানের কথা বলে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়, তখন সেই পদক্ষেপের সমালোচনা অনেক সময় গুরুত্ব পায় না। তাছাড়া কোন বিপদের কথা আগাম বললে অনেক সময় গুরুত্ব থাকে না। বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের কথা বলে ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিপদের কথা, আমদানি নির্ভর জ্বালানি পরিকল্পনার সমস্যার কথা তো আগামই বলা হয়েছিলো। লেখক: সর্বজন কথার নির্বাহী সম্পাদক