চার কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব ওঠছে ক্রয় কমিটিতে
সোহেল রহমান : [১] বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে চুক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি (লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) কার্গো আমদানি করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে পৃথক চারটি কোটেশনের মাধ্যমে চার কার্গো এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলেরেট এনার্জি এলপি ১ কার্গো, সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক গানভর প্রাইভেট লিমিটেড ১ কার্গো এবং সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া ২ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতিটি কার্গোতে এলএনজির পরিমাণ ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার টাকা।
[২] জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি পঞ্জিকা বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) স্পট মার্কেট থেকে মোট ১৩ কার্গো এলএনজি আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। এর বিপরীতে আগামী এপ্রিলের জন্য পাঁচ কার্গো এলএনজি আমদানির প্রয়োজন হবে।
[৩] জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) প্রস্তুত করে বিভিন্ন দেশের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ চূড়ান্ত করেছে পেট্রোবাংলা। গত কয়েক মাস ধরে স্পট মার্কেটে এলএলজি’র দামের তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে গত গত ৪ মার্চ আরপিজিসিএল থেকে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের জন্য স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কার্গো সরবরাহে দর প্রস্তাব আহ্বান করে ই-মেইলে চিঠি পাঠানো হয়। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব দাখিল করায় এবং পুন:দর প্রস্তাব আহ্বানের পর্যাপ্ত সময় থাকায় এলএনজি আমদানির দাম আরও প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য পুন:দর প্রস্তাব আহবান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি প্রতি ইউনিট এলএনজি ৯.৭৮৫৮ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৪২৩ কোটি ১৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬৫ টাকা।
[৪] একই পদ্ধতিতে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স গানভর প্রাইভেট লিমিটেড ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি ইউনিটের দাম ৯.৩৬৯০ ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হবে ৪০৫ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৮ টাকা।
[৫] সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভিটল এশিয়ার কাছ থেকে প্রতি ইউনিট এলএনজি ৯.৪৭০০ ডলার হিসেবে ১ কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৪০৯ কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার ৪৪ টাকা।
[৬] একই প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ভিটল এশিয়ার কাছ থেকে প্রতি ইউনিট এলএনজি ৯.২৩৮৮ ডলার হিসেবে আরও ১ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৩৯ কোটি ৫১ লাখ ৫২ হাজার ৭৬১ টাকা।
[৭] সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দৈনিক ৫০০ এমএমসিএফ এবং দৈনিক ৬০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ টার্মিনাল দু’টির মাধ্যমে জি-টু-জি ভিত্তিতে পেট্রোবাংলার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় কাতারগ্যাস থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএল এবং ওমান থেকে ১০ বছর মেয়াদে বর্তমানে ১.০ এমটিপিএল মোট ৩.৫ এমটিপিএল এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।