৫৯৫ টাকায় মাংস কিনতে ভিড় বাড়ছে খলিলের দোকানে
আমিনুল ইসলাম : [১] ৫৯৫ টাকায় মাংস কিনতে ভিড় বাড়ছে খলিলের মাংসের দোকানে। সকাল থেকেই ধীর্ঘ লাইে ন দাঁড়িয়ে থেকে মাংস কিনছেন ভোক্তারা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাজারে কম দামে মাংস কিনতে ক্রেতাদের লম্বা লাইন লেগেছে রাজধানীর শাহজাহানপুরের খলিল গোস্ত বিতানে। রাজধানির বিভন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন তারা। ভিড় থাকায় এক দেড় ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে মাংস কেনার জন্য। তবুও খুশি তারা। কমদামে মানসম্মত মাংশ পেয়ে বেশ খুশিই তারা। তাদের একটায় প্রশ্ন খলিল পারলে অন্যরা পারেন না কেন? বাজার ব্যবস্থায় সমস্যা কোথায় তা খুঁজে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান তারা।
[২] শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহজাহানপুরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে কথা হয় ঢাকা মিরপুর থেকে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানালেন, আমাকে কেন মীরপুর থেকে জাহজাহানপুরে আসতে হলো। খলিল যদি ৫৯৫ টাকা কেজি দরে মাংশ দিতে পারেন তাহলে অন্যরা কেন পারছেন না বা দিচ্ছেন না। সেই কারণ টা খুঁজে বের করুন। ব্যবসায়িদের অতি মনুফা করার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আর বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্লোভভাবে কাজ করতে হবে। মাংসের দাম কেজিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পার্থক্য হতে পারে না।
[৩] খলিল বলেন, কম দামে মাংস কিনতে তার দোকানে ভিড়ম বেড়েই যাচ্ছে, শুক্রবার ৫০টি গরু বিক্রি হয়েছে। শনিবারও মাংস কেনার জন্য ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত মাংস বিক্রি করা হবে। তার মাংসের দোকানে ৪০ জন কর্মচারী কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেন খলিল।
[৪] টিকাটুলি থেকে রশিদ নামে এক ক্রেতা এসেছেন খলিলের দোকানে। তিনি জানান, তারা এলাকায় ওভয়দাস লেনে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা দরে। এখেনে কেজিতে ২০০ টাকা কম। তাই এখানে এসেছে। দেখে তো মাংসের মান বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। আমার এলাকায় কম দামে মাংস পেলে আমার এখানে আসার দরকার ছিল না। বাজার তদারকি সংস্থাগুলো যে কি করে বুঝে আসে না। এলকা ভেধে এক কেজি মাংসের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা তফাত কি ভাবে হয়।
[৫] খলিলের পাশেই আরেক দোকানে প্রতি কেজি মাংসর দাম হাকা হচ্ছে ৭৫০ টাকা। কিন্তু ওখানে তেমন কোন ক্রেতা চোখে পড়লো না। নেই। দরে বিক্রিতবে, আমাদের মতো মধ্যবিত্তের পক্ষে ৮০০ টাকা দিয়ে মাংস কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব। সেখানে এই ব্যবসায়ী দাম কমানোর কারণে পরিবারকে মাসে ২-৩ দিন গরুর মাংস খাওয়াতে পারি।
[৬] কমলাপুর থেকে আব্দুল মজিদ নামে আরেক বয়স্ক মানুষ এসেছেন এখানে মাংস কিনতে। তিনি দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ৫ কেজি মাংস নিয়েছেন। তিনি বলেন, খলিল যদি কম দামে মাংস বিক্রি করতে পারে, অন্য ব্যবসায়ীরা কেন দাম কমাতে পারছে না? সেটা সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে আমাদেরকে এইভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস ক্রয় করতে হবে না। সব জায়গায় যদি এই দামে (৫৯৫ টাকায়) মাংস বিক্রি হতো তাহলে তো এতো লম্বা লাইন হতো না। তবে মাংসের মান নিয়ে তার কোন প্রশ্ন নেই। তিনি বলেন সব জায়গায় একই মাংস দেয়।
[৭] জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে অনেকটাই কম দামে বিক্রি হচ্ছিল গরুর মাংস। কোথাও ৬০০ টাকা আবার কোথাও দাম রাখা হচ্ছিল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা। তবে রমজান মাসকে সামনে রেখে এই দাম আর স্থিতিশীল থাকেনি। কেজি প্রতি তা দাঁড়িয়েছে ৮০০ টাকায়। তবে স্থানভেদে কোথাও কোথাও এখনও ৬০০ টাকার নিচেও পাওয়া যাচ্ছে।
[৮] রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ জায়গাতেই ৭৫০-৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। কোথাও সেটা ৮০০ টাকা। মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেট, মহাখালী কাঁচা বাজার, হাতিরপুল কাঁচা বাজার ও বনানী কাঁচা বাজার, গুলশান নতুন বাজারে এই দাম দেখা গেছে।