দুই কার্যদিবস পর আবারও দর পতনে শেয়ারবাজার
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার দুই কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আবারও বড় ধরনের দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি কমেছে সবকয়টি মূল্যসূচক। [২] একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। তবে লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। এর আগে টানা ৮ কার্যদিবস দরপতন হওয়ার পর গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। [৩] এ পরিস্থিতিতে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা। এতে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু লেনদেনের শেষ দেড় ঘণ্টায় বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। ফলে গড়পড়তা সব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা যেমন বড় হয়েছে, তেমনই সবকয়টি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
[৪] দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৫টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৪টির। এছাড়া ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯১ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। [৫] আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬১০ কোটি ৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ১১ লাখ টাকার। ২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিকস। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গোল্ডেন সন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, মালেক স্পিনিং, শাইনপুকুর সিরামিকস, এমারেল্ড অয়েল, ওরিয়ন ফার্মা এবং গোল্ডেন হার্ভেস্ট।
[৫]দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, রূপালি ব্যাংক, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রনী ব্যাংক মি.ফা., এমারেল্ড ওয়েল, শাইনপুকুর সিরামিকস, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, শাশা ডেনিমস ও এনভয় টেক্স।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-এবি ব্যাংক, নিউ লাইন ক্লোথিং, এএফসি অ্যাগ্রো, আফতাব অটো, আরএসআরএম স্টিল, কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্স, জিকিউ বলপেন, এইচআর টেক্স, অ্যাক্টিভ ফাইন ও সাইফ পাওয়ার।
[৬] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫২টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা।