ডলার আসছে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না : অর্থমন্ত্রী
সোহেল রহমান : [১] অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসতে শুরু করেছে। আগামীতে আসবে-যাবে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না। [২] রোববার রাতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) আয়োজিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
[৩] অর্থমন্ত্রী বলেন, মানুষের আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন ছিল, অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমরা সেই কাজটি করেছি। যাদের টাকা আছে, তারা নিয়ে আসবে, আবার নিয়ে চলে যাবে। এই জিনিসটাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ক্যাম্পেইন শুরু করেছি, ঈদের পর আরও বেশি ডলার আসা শুরু করবে। আইনটা মানুষের পছন্দ হয়েছে। এখন ডলার আসবে। [৪] বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা কয়েকদিন আগে বলছিলেন যে, দেশের সব শেষ হয়ে গেছে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে! দেশ শ্রীলঙ্কা কি হলো? হয়নি। নতুন যে ব্যাংকটি হলো, একবার তারা বাংলাদেশে ঘুরে গেছে। তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে তৈরি। তারা ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা, ব্যাংক ও বন্ধু দেশ আসছে। আমি দুঃখিত যে, আমরা শ্রীলঙ্কা হলাম না। আমরা ওপথে যাইনি।
[৫] বিশেষ অথিতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, ইশতেহারে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বশাসনের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। ব্যাংকের বিষয়ে সমস্ত দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেটা মনে মনে করবে, সেটা স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। [৬] তিনি বলেন, এখানে আরও একটি কথা বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণের বিপরীতে যে সঞ্চিত রাখার দরকার সেটা বাধ্যতামূলক করা হবে। যাতে অন্যথা না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। এর অর্থ হলো, ব্যাংকের নিজস্ব একটা স্ট্রিগার মেকানিজম থাকার দরকার। সেটা হলো ব্যাংক-কে যদি খেলাপি ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি রাখতে হয়, তাহলে তার ঋণ বিতরণের ক্ষমতা কমে যাবে। এটা একটি স্ট্রিগার। [৭] আর একটি বিষয় হলো, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ঋণ। ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি থেকে কথাটি বলছি, কিন্তু এটা স্পষ্ট নয়। একটি হলো ব্যবসায়ীর গাফিলতির কারণে বা ক্ষমতা আছে, কিন্তু দিচ্ছে না। আরেকটি হলো পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা বৈশ্বিক প্রতিকূল অবস্থার কারণে ঋণের টাকা দেয়ার ইচ্ছা থাকার পরও সে দিতে পারছে না। এই ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতকে ইচ্ছাকৃত করা উচিত নয়। সেই কাজটিই হবে যা ইচ্ছাকৃত। আর অন্যটা হলো পরিবেশ পারিপার্শ্বিকতা বা বৈশ্বিক পরিস্থির কারণ সৃষ্ট।
[৮] ড. মশিউর রহমান বলেন, শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে স্কুল কাছে হওয়ার বিষয়টি অত্যাবশ্যক। গত ১৫ বছরে দায়িত্বকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করেছেন। শিক্ষার হারে বড় ধরনের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এ সময়ে শতভাগ শিশুর স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে, ৭০ ভাগ শিশুর মাধ্যমিকে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সময়ে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে।
[৯] তিনি বলেন, শিক্ষার উপরের দিকে মান নষ্ট হয়নি। যেহেতু নিচের দিকে শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে, সে জন্য মনে হতে পারে শিক্ষার মানটা ভয়াবহ হারে কমে গেছে।
[১০] মূল প্রবন্ধে কাজী ইকবাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইস্তেহারে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে। সেগুলো হচ্ছেÑ বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দেয়া; ক্ষুদ্র-কুটির-এসএমই ও বৃহৎ শিল্পের মাধ্যমে শিল্প উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ বাজার নির্ভর শিল্পায়ন করা। ইশতেহারে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে ও দেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রযুক্তি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দেশে যে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেখানে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই।