পণ্য বর্জনের পরামর্শ দিয়ে কী হবে?
রবিউল আলম
ভারতীয় গরু কোরবানি দিলে আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীনের দরবারে কবুল হবে কি? এমন প্রশ্ন শুধু আপনাদের মনে উদয় হতে পারে। ভারতের মানুষ মুসলমান হতে পারবে কি? ভারতীয়দের সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে রিজভীদের, অথবা বিএনপি-জামায়াতের সৃষ্টিকর্তার মিল আছে কি! গরুগুলো কোন জাতের? পেঁয়াজ, রসুন, আধা কোন জাতের? বিএনপির ভেতরে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে বর্জন করুন। জিয়াউর রহমান ভারতের খাদ্য বস্ত্র গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকলে মরন্ত বিচার করুন, তার আদর্শ বর্জন করুন। পাকিস্তান থাকতে ভারতীর পণ্যের রক্ত সঞ্চালন মেনে নিতে পারবো না। মিস্টার রিজভী রাজনীতির জন্য মিডিয়ায় কথা বলতে হলে জানতে হবে, খাদ্যের জন্য নিত্যপণ্য, ব্যবহারের জন্য বস্ত্র,পণ্য একবিষয় নয়। ভারতীয় গাড়ি গরু, পেঁয়াজ থেকে আলু। চিকিৎসা থেকে কোন সামগ্রী বাংলাদেশের জনগণ আপনার কথায় বর্জন করবে? প্রয়োজন মিটাতে না পারলে। বাংলাদেশে খায়, ভারতে মল-মূত্র ত্যাগ করতে হয়, এমনো কিছু অঞ্চল আছে। ইচ্ছে করলেই ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের বিভাজন করা যাবে না। যারা করতে চায়, রাষ্ট্রকে নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের খেলা খেলতে চায়, ফিলিস্তিন ইসরায়েল ৭৪ বছর যুদ্ধ করে শান্তির জন্য স্বাধীনতা মানচিত্র, কিছুই রক্ষা করতে পারছেন না।
বিএনপির গায়ের চাঁদর পুড়িয়ে রিজভী সাহেব যে নাটকের দৃশ্য ধারণ করলেন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়া থাকলে আপনার আণ্ডারপ্যান্ট পরীক্ষা করা হতো, ভারতীয় না পাকিস্তানি। বাংলাদেশের জন্মগত পথচলা শুরু করেছে ভারতীয় পণ্যের মাধ্যমে, সে পিচ ডালা পথ, পাথরের সেতু, যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে ভারতীয় পণ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করবেন কী করে? আপনি যে পথে হাটেন, যে গাড়িতে চড়েন, ভারত ছাড়া আমি আবিস্কার করতে পারছি না। রিজভী সাহেবের গায়ের চাঁদর, কুকুরের খাদ্য থেকে নেতাদের চিকিৎসা ও আশ্রয়স্থল ভারত। আত্মগোপনের রাজনৈতিক কৌশলের নাম ভারত। ভারতবিরোধী স্রোগান ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির মঞ্চ নাচাতে পারবেন না। ইতিহাস লেখতে পারবেন না। ভারত, আপনাদের রাজনৈতিক তসবি, প্রতি মুহূর্তে জবতে হবে। ভারতীয় পণ্য বর্জন করার আগে, ভারতের নামটা আপনাদের মুখ থেকে বর্জন করুন। জনগণের আদালতের পরীক্ষার জন্য। না পারলে আপনাকে দল থেকে বর্জন করা হবে, বিএনপির অফিসে ঘুমানো বন্ধ করে দেওয়া হবে। বারবার বিএনপির রাজনীতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য।
ভারতকে অর্জন করতে পারেননি, পণ্য বর্জনের পরামর্শ দিয়ে কী হবে? জাতি গ্রহণ করবে কেন? আপনার দলের মহাসচিব ভারতীয় সম্মতি আদায় করতে ব্যর্থ হওয়াতে পদ হারাচ্ছে। আপনার জন্যও তারেক রহমান, কিছু একটা ধাঁর দিচ্ছে যদি বিএনপির নেতাকর্মীদের ভারতীয় পণ্য বর্জন করাতে ব্যর্থ হন। ভারতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা যাবে না। ভারতের রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক আছে, বাঙালি জাতি সে বিতর্কের অংশ। ধর্মের বিভাজনে বিজেপির রাজনীতি নিয়ে ভারতীয়রা খণ্ড খণ্ড, বাংলাদেশ তার অংশ হতে পারে না। বিজেপি ভারতের একটি রাজনৈতিক দল মাত্র, বিজেপির জন্য ভারত বর্জন নাকি ভারতীয় পণ্য বর্জন? সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণের। ঘর-বাড়ি না থাকা, বিএনপির অফিসে রিজভীর চাদরের ময়লার সঙ্গে মনে ময়লা জমেছে, ছারপোকার যন্ত্রণায় আগুন দেওয়া ছাড়া বিকল্প ছিলো না। দেশের জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া রিজভীর রাজনীতি, বিএনপিকে পদে পদে বিপদগ্রস্ত নাম হচ্ছে রিজভী।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বৈয়কটের জন্য, বাঙালি জাতিকে লজ্জিত হতে হয়েছিলো। বৈকট, বর্জন, বহিস্কারের রাজনীতির জন্য বিএনপির অবস্থানকে কোথায় এনে ধার করিয়েছে? নেতাকর্মীরা এখনো অনুধাবন করতে না পারলে, কোথায় অবস্থান হবে, আমি বিস্মিত। বারবার ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কথা মনে হচ্ছে। এক তারেকের জন্য বিএনপির দুর্দশা ঘুচাতে পারবেন না। বেয়াদবের জন্য রাজনীতি হতে পারে না। রিজভীকে অপদার্থও বলেছিলেন, আলোচনা ছাড়া রাজনীতির জন্য। হয় ছিঁড়ে ফেলো, না হয় আলোচনায় আসো দলের নেতাকর্মীদের বাঁচানোর জন্য। বিএনপি এখনো কোন আশার রাজনীতি করে, আমি বুঝি না। যারা বিএনপির জন্য রাজনীতি করেন, তারা বুঝে থাকলে রিজভীকে বোঝান। গায়ের চাঁদর নিত্যপণ্য এক নয়, গায়ের বস্ত্র। বস্ত্রহরণ মহাভারতের অংশ বিএনপিকে দিয়ে করানো জন্য জবাব দিতে হবে রিজভীকে। গ্রাম্য একটা কথা আছে, একে নাচনে বুড়ী, লগে কিছু নেতা দিয়েছে ঢোলে বারি। হয়ে গেলো ভার বিরোধী বিএনপি। আওয়ামী লীগের জন্য কাজটা সহজ করে দিলো। বিএনপির হাইকমান্ড সরকারের এজেন্ট খোঁজে? ভারতের দালাল খোঁজে? লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি