রাজধানীসহ সারাদেশে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে
মাসুদ মিয়া : [১] রাজধানীসহ সারাদেশে রমজানের শুরুতে সবজির বাজারে যে তেজিভাব ছিল তা এখন তেমন নেই। বেশ কিছুটা স্বস্তি এসেছে সবজির বাজারে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গত দুই সপ্তাহ থেকে বেড়ে যাওয়া চালের দাম এখনো কমেনি। এছাড়া ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে আলুর দামও।
[২] অন্যদিকে বেশ আগে থেকে বাড়তি ডাল, তেল-চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দামেও কোনো সুখবর নেই । গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
[৩] সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজার শুরুতে বেগুনের কেজি ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এখন বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। শসার কেজি রোজার শুরুতে ছিল ১০০ টাকারও ওপরে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে। একইভাবে লাউ, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়াসহ ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলার মতো সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে।
[৪] শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতারা বলেন, এখন আর বাজারে সবজির চড়াভাব থাকবে না। দিন যত যাবে ঢাকার মানুষ কমতে থাকবে (ঈদে গ্রামে যাবে)। শাক-সবজির দামও কমতে থাকবে। এখন মোকামেও সবজির দাম প্রতিদিন কমছে।
[৪] তবে বাজারে অন্য কোনো পণ্যের দামে তেমন কোনো সুখবর নেই। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে প্রধান খাদ্যশস্য চালের দাম। যদিও রমজানের এসময়ে চালের চাহিদা কিছুটা কম। আবার সরবরাহ রয়েছে ভালো।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, প্রতি কেজি চালের দাম গত এক সপ্তাহে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা চালের কেজি গত এক সপ্তাহে দুই টাকা বেড়ে ৫২ টাকা হয়েছে। আর সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে তিন টাকা।
[৫] তবে বাজার ঘুরে এ ধরনের চালের দাম আরও বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগে যে মোটা চালের (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) কেজি ৫০-৫১ টাকা ছিল তা এখন ৫২-৫৩ টাকা। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর–২৮) কেজি ৫৫-৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৭-৬০ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চালের কেজিপ্রতি দাম ৬২-৭৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬৪-৮০ টাকা হয়েছে।
[৬] অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী ছিল। এ মাসের শুরুতেও সরকারিভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে ও হালি জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করায় ১২০ টাকা কেজির পেঁয়াজের দর ৬০ টাকায় নামতে দেখা যায়। কিন্তু হুট করে নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ২৩ মার্চ বাজার নিয়ন্ত্রণে ভারত আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
[৭] ওই নিষেধাজ্ঞার খবরকে পুঁজি করে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
[৮] অন্যদিকে আলুর বাজারে সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। তবে এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে আরও বেশি; ১২ থেকে ১৫ টাকা। কারণ পেঁয়াজের মতোই মাসখানেক আগে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছিল আলুর দর। প্রতি কেজি নেমেছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। কিন্তু কিছুটা বেড়ে গত সপ্তাহে আলু বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এখন দাম আরও বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
[১১] এদিকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ৯০০ টাকা, চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৪০০-৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৪০০- ৬০০ টাকায়, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ টাকা ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।