বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ ব্যয় ১১১ কোটি টাকা বাড়ছে
সোহেল রহমান : [১] বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণে ১১১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। গত ২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুমোদিত মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড (জিটিসিএল)।
[২] জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হালনাগাদ মৌজা রেটে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ব্যয় প্রাক্কলন, ডলারের বিনিময় হার পরিবর্তন, গণপূর্তের রেট শিডিউল পরিবর্তনÑ মূলতঃ এ তিন কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া হায়ারিং চার্জ, অডিও-ভিডিও/চলচ্চিত্র নির্মাণ ও অফিস ভাড়া ইত্যাদি নতুন অঙ্গ সংযোজনের কারণেও ব্যয় বেড়েছে।
[৩] সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৬৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প বাস্তবায়কারী সংস্থা জিটিসিএল’র অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ৩ লাখ টাকা। ব্যয় বাড়ার সংশোধিত প্রস্তাবে সরকারি অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ১০১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ১ হাজার ৪৭০ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং জিটিসিএল’র অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
[৪] সূত্র জানায়, ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা চার বছর বাড়ানো হয়েছে। মূল প্রস্তাবে ২০২১ সালে জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংশোধিত প্রস্তাবে সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
[৫] জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকার আওতায় রয়েছেÑ বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি, নীলফামারীর সৈয়দপুর এবং রংপুর জেলার পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, রংপুর সদর, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলা। দেশের উত্তর জনপদে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা; গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন ও আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণ; গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাণিজ্যিক ও অন্যান্য গ্রাহকের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা ইত্যাদি এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।
[৬] সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে সৈয়দপুর পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে দেশের উত্তর জন পদের ১১টি জেলায় গ্যাস সরবরাহ অবকাঠামো সৃষ্টি হবে। গ্যাস সরবরাহের সুবিধা নিশ্চিত করা হলে রংপুর, পীরগঞ্জ, সৈয়দপুর, উত্তরা ইপিজেড এবং প্রস্তাবিত নীলফামারী অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৫০ কিলোমিটার উচ্চ চাপসম্পন্ন সঞ্চালন পাইপ লাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, শিল্পায়ন দ্রুততর হবে, বন ভূমি উচ্ছেদ কমে যাবে। এছাড়া সর্বোপরি, সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ জ্বালানি সংকট থেকে মুক্তি পাবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে।
[৭] প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ৩০৭.২৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ৫৫৬.৭৫ একর ভূমি অধিযাচন; লাইন পাইপ ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি ক্রয়; ১৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণ; এইচডিডি পদ্ধতিতে ৬টি নদী ও ২টি খাল ক্রসিং; সিপি সিস্টেম স্থাপন; ইপিসি ভিত্তিতে ১টি সিটিগেট স্টেশন (সিজিএস) ও ২টি টাউন বর্ডার স্টেশন (টিবিএস) স্থাপন এবং ভূমি উন্নয়ন ও পূর্ত নির্মাণ কাজ।