অর্থ বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে পার্থক্য ১,৩৩৫ কোটি ডলার মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ৫৭৪.৪৩ ডলার
সোহেল রহমান : [১] সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মিলছে না। দুই হিসাবের মধ্যে পার্থক্য প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা (১ ডলার = ১১০ টাকা হিসাবে)। [২] অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৩) সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ১৯১ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার (১ ডলার = ১১০ টাকা হিসাবে)। এটি জিডিপি’র ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।
[৩] অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, একই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫২৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮ লাখ ২৭ হাজার ৯৫৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা (১ ডলার = ১১০ টাকা হিসাবে)।
[৪] বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন শেষে সরকারের মোট পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার (এটি ছিল জিডিপি’র ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ)। সে হিসাবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি প্রায় ৫৮ কোটি ডলার কমেছে।
[৫] সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্বি-পাক্ষিক উৎসের তুলনায় বহুপাক্ষিক উৎস থেতে গৃহীত ঋণের পরিমাণ বেশি।
[৬] অর্থ বিভাগের হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের মধ্যে বহুপক্ষীয় ঋণের পরিমাণ ৫৯ শতাংশ এবং দ্বি-পাক্ষিক ঋণের পরিমাণ ৪১ শতাংশ। [৭] এদিকে সরকারি ঋণের বাইরে বেসরকারি খাতেও বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ১২৮ কোটি ৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে দেশে সরকারি-বেসরকারি মোট পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৯ হাজার ৬৫৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং সার্বিকভাবে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫৭৪ দশমিক ৪৩ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩ হাজার ১৮৭ টাকা।
[৮] অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়নে স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান ‘মধ্য মেয়াদী ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল’ আরও আধুনিকায়ন করা হবে এবং আঙ্কটাড-এর কারিগরি সহায়তায় অর্থ বিভাগে ‘ডেট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল এনালাইসিস সিস্টেম’ নামে একটি কাস্টমাইজ ডাটাবেজ স্থাপন করা হবে।