মো. আখতারুজ্জামান : [১] এপ্রিল মাসের জন্য নতুন হিসাবে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে কমেছে ২ টাকা ২৫ পয়সা। নতুন দাম গতকাল রোববার রাত ১২টা থেকে কার্যকর হচ্ছে। [২] রোববার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্বিতীয় দফা জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলো।
[৩] এর আগে গত গত ৭ মার্চ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৭৫ পয়সা, অকটেনে ৪ টাকা এবং পেট্রোলে ৩ টাকা দাম কমানো হয়।
[৪] আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ঘোষণা করে। [৫] স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া চালুর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলে দেশে কমবে আবার বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়বে। তবে ডিজেলের দাম কমলে বা বাড়লে পরিবহন ভাড়া কী হবে তা নিয়ে এখনো সরকারের কোনো নির্দেশনা পায়নি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। [৬] দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল। এটি সাধারণত কৃষি সেচে, জেনারেটর এবং পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। ফলে দাম কমার প্রভাব ভোক্তা পর্যায়ে খুব বেশি পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বরং পরিবহন ব্যবসায়ীদের লাভ বাড়বে।
[৭] জ্বালানি বিভাগ বলছে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটার প্রতি ৯০.৭৬ রুপী বা ১৩০.৬৯ টাকায় (১ রুপী- ১.৪৪ টাকা) এবং পেট্রোল ১০৯.৯৪ রুপী বা ১৫৮.৩১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা বাংলাদেশ থেকে বেশী।
[৮] জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিমের মতে, সরকার নামমাত্র দাম কমিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের বর্তমান তেলের যা দাম সে অনুসারে দাম আরও কমা উচিত ছিল। কী পদ্ধতিতে হিসাব করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিপিসির আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন রয়েছে। তেলের দাম কমেছে কিন্তু পরিবহন ভাড়া না কমলে এর সুফল জনগণ পাবে না।
[৯] কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, দাম কমানোর লাভ মূলত পাবে ধনী ব্যক্তিরা। ডিজেলের সামান্য দাম কমায় পরিবহন ভাড়া কমবে না, মূলত পরিবহন ব্যবসায়ীরা লাভ করবে।
[১০] বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। অনেকটা এ প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের দামও নির্ধারণ করা হবে।