
ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা কে ঠেকাবে?
রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহ-সাধারণ সম্পাদক : দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ স্থিমিত হয়নি, কিন্তু আমাদের কথা প্রচার হচ্ছে কম। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কাছে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছিলাম আসলে কী কী হিসাবে দাম বাড়ালো? আগে একটা এনার্জি রেগুলারিটি কমিশন ছিলো। বলা হতো যে, কোনো কোম্পানি যদি লাভ করে, তাহলে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারবে না। বর্তমানে কোম্পানিগুলো লাভ করছে তাহলে কেন বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিলো, বিদ্যুতের জন্য প্রধান জ্বালানি যদি হয় তেল, তবে তেলের দাম বাড়লে বিদ্যুতের দাম বাড়বে কেন? তারপর আমরা বলেছিলাম আপনাদের হিসেবে গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল প্রতি ইউনিট খরচ করলে ৪ টাকা যদি কয়লা দিয়ে উৎপাদন করি তাহলে ৬ টাকা আর যদি ফানের্স অয়েল দিয়ে উৎপাদন করলে ১৭ টাকা। ডলার সংকটের কারণে নাকি গ্যাস আর কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না, তাই ফার্নেস অয়েল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হচ্ছে। কারণ ফানের্স অয়েল উৎপাদন করতে ডলার লাগে না। আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে সাতপাঁচ বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছিলো তাই আমরা প্রতিবাদ করে বলেছিলাম যে, আমাদের দেশে প্রতি বছর ৮৭ লাখ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যে হারে দাম বাড়ানো হচ্ছে তারও একটা স্থিরতা হিসেব দিলো যে আমাদের এখানে লাইফ লাইন বিদ্যুৎ গ্রাহক যারা আছে তাদের জন্য মাসে ২২টাকা বাড়িয়েছি। দেড় কোটি লাইফ লাইন আছে তাহলে মাসে ৩৩ কোটি টাকা হলে বছরে সাড়ে তিনশো কোটি টাকা হওয়া স্বত্ত্বেও লাইফ লাইন সার্ভিস দিতে পারেনি কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে আদায় করবে ৮ হাজার ৭০ কোটি টাকা।
মানুষকে বোঝাবে তারা মাত্র ২২ টাকা বাড়িয়েছে। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, ক্যাপাসিটির চার্জের নামে গত বছর নিয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা এ বছর তা ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ২৬ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ালো। ক্যাপাসিটি চার্জ কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে পারেন আর জনগণের উপর বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে তা করলো ৮ হাজার কোটি টাকা। আমরা এ কথাগুলো যে বলি তা প্রচার হয়না। বাজারে দাম বৃদ্ধি হচ্ছে দুটি কারণে। সরকার ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করার পরও ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। কিন্তু সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে জনগণ তা মানতে বাধ্য তাদেরকে দমন করা হয়। আর ব্যবসায়ীদেরকে প্রশ্রয় দেয়া হয় যে তারা না মানলেও কোনো কিছু করবে না। ফলে, ব্যবসায়ী তোষণ এবং জনগণকে নীপিড়নের নীতি চলছে। এ বিষয়ে আমরা কথা বলতে চেয়েছিলাম যে কেন ব্যবসায়ীরা মানবে না? ভ্যানে সবজি বিক্রেতারা এক মণ বেগুন বিক্রি করছে ৪০ টাকায় আর তার ভ্যান ভাড়া হচ্ছে ৭০ টাকা। এভাবে তার ভ্যান ভাড়া উঠবে না। বাজারে যতো হাত ঘোরে ততো দাম বাড়ে এ হাতটা কার? এগুলো কী সরকার দেখতে পায় না?
উত্তরবঙ্গ হচ্ছে সবজি উৎপাদন কেন্দ্র। উন্নত সবজি আমদানির জন্য যদি কয়েকটা ডেডিকেটেড ট্রেন তৈরি করে দেওয়া হতো তাহলে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের দেশে পণ্য চলে আসতো। কৃষকরা তাদের নায্যমূল্য পেতো এবং ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে বাজার করতে পারতো। আমাদের দেশ এতো উন্নত ও মেগা প্রকল্প করতে পারছে কিন্তু কৃষককে সহায়তা করা এবং জনগণকে স্বস্তি দিতে পারছে। ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে চায় এবং ব্যবসায়ীরা মুনাফার উদ্দেশ্যে করেন যেমন রাজনৈতিক দলেও তারা তেমন মুনাফা ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলেছে। যেসব রাজনৈতিক দল ব্যবসায়ীর উপর নির্ভরশীল ছিলো তারা বর্তমানে নিজেরাই ব্যবসায়ী হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী এবং সরকার দুজন দুজনার পরিপূরক হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা যেমন মুনাফার উদ্দেশ্যে ব্যবসা করে তেমনি রাজনীতির ক্ষেত্রে মুনাফা তৈরির ব্যবস্থা করে ফেলেছে। রাজনৈতিকেরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চলে। ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক হচ্ছেন আর রাজনৈতিকরা ব্যবসায়ী হচ্ছেন। ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক এক অপরের হাত ধরাধরি করে জনগণের হাত মচকে দিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু ব্যবসায়ীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তাহলে নিয়ন্ত্রণ করবে কে? সরকার তো আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। জনসংখ্যা আমাদের দেশে সমস্যা হলেও তারা দেশের সম্পদ। ১ কোটি ৪৯ লাখ মানুষ দেশের বাইরে থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ করছে। গার্মেন্টের কর্মীরা উৎপাদন করে দেশের জিডিপি বাড়াচ্ছে। যারা দেশের টাকা পাচার করছে তারা বিপদ না আর যে জনগণ সম্পদ তৈরি করছে তারা হয়ে যাচ্ছে আপদ এ ধারণাটাই আমাদের পাল্টাতে হবে। যখন প্রশ্ন আসে যে, কোথাও কী অভাব আছে তখন বিবিসির জরিপে বলা আছে, দেশের ৩৬ লাখ মানুষ জানে না যে পরের বেলায় তারা কী খাবে? একটা সরকারি সংস্থা যেখানে এক বেলা না খেয়ে থাকলেও সে হিসেব রাখে। আমরা ডালকে বলতাম গরিবের খাবার কিন্তু এখন ১৯ শতাংশ মানুষ ডাল কিনে খেতে পারে না। ব্যবসা করে বাজনীতি করা অন্যায় না তবে একটি চক্র তৈরি হয়েছে। নেতারাই ব্যবসা করছেন আবার তারাই ব্যবসা করে নেতা হচ্ছেন। অবস্থাটা হলো ডান হাত দিয়ে বা হাতকে চাপ দেওয়া যায় না দুটোই আমার হাত অর্থাৎ, নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।
নভেম্বরের ১৯ তারিখে খলিল ঘোষণা করলো যে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করলে তার লাভ হবে, বিক্রি করা শুরু করলে অন্যান্য ব্যবসায়ী এবং ভোক্তা অধিদপ্তর খলিলের সঙ্গে বৈঠক করে বলে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করতে বলে। তাহলে ভোক্তা অধিদপ্তর কিন্তু ৫৯৫ টাকা রাখেনি সেটা বাড়িয়ে দিলো। কিন্তু খলিল ৬৫০ টাকায় বিক্রি করতে না চাওয়ায় তাকে হুমকি দেওয়া হয়, অস্ত্র দেখানো হয়। হুমকির জন্য আইনি সহায়তা পেলেও আসামীরাও ধরাছোঁয়ার বাইরে সব দিক মিলিয়ে খলিল এখন বিরক্ত হয়ে গেছে। সরকার কবে করবে? নিশ্চই খলিল মরে যাবার পরে? পদক্ষেপ নেবেন ঠিকই কিন্তু ততোদিনে আর এটা থাকবে না। জনগণের প্রতি সরকারের ও রাজনৈতিক নেতাদের স্বেচ্ছারোপিত দায়বদ্ধতা থাকা দরকার। জনগণের চাপ কেন দিতে হবে? ব্যবসায়ীদেরকে আমি দোষ দিবো না কারণ তাদের কাজই হচ্ছে মুনাফা লাভ করা কিন্তু রাজনৈতিকদের কাজ হচ্ছে জনগণের পক্ষে থাকা। রাজনৈতিক দল যদি ব্যবসায়ীদের পক্ষে যায় তাহলে রাজনৈতিক দল তার দায়িত্ব পালন করলো না আর ব্যবসায়ী যদি রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতা করে তাহলে বুঝতে হবে এখান থেকে তার কিছু বেনিফিট আছে। ডিমের দাম বাড়িয়ে এক সপ্তাহে বাজার থেকে সাড়ে ৫০০শ কোটি টাকা নিয়ে নিলো যখন বলা হলো ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হবে সঙ্গে সঙ্গে তা কমে গেলো। তারমানে, এ দামবৃদ্ধি ব্যবসায়ীরাই করছে তাদের কাউকেই আইনের আওতায় আনা হয়নি।
আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা : আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছেন আমাদেরকেও তিনি নিজের হাতের মুঠোয় রেখেছেন। আমি ও দলের মহাসচিব ৪ মাস জেলে বন্দি ছিলাম। এ অবস্থায় যদি দোষারোপ করা হয় যে বিএনপি বাজার অস্থিতিশীলের জন্য দায়ী তাহলে এটাকে বাচ্চাসুলভ আচরণ ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। কারণ, বাজার নিয়ন্ত্রণ পার্লামেন্টর হাতে। সরকার যাদের নমিনেশন দিয়ে মন্ত্রী বানিয়েছেন শিল্প, অর্থ, বাণিজ্য যারাই আছে তারা সকলেই শিল্পপতি। তারাই তো সরকারের সামনে থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার তা দেখতে পারছে কিন্তু সরকার তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কারণ এ সকল মন্ত্রীরাই সরকারকে অর্থ, বুদ্ধি ও অন্যান্য নানান দিক দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে। তার বড় কারণ হলো সরকার যেহেতু জনগণের উপর ভক্তিশীল ও নির্ভরশীল সরকার নয়। সরকার নির্ভরশীল এসব ব্যবসায়ীদের উপর। নির্ভরশীল এদের মতো ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থে লুটপাত করার জন্য সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এটাই হলো রাজনীতির দুর্ভোগের কারণ। আমরা যেভাবে রাজনীতি শুরু করেছিলাম তখন আমরা কর্মীদের চাঁদায় দল চালাতাম কোনোদিন ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদার জন্য যেতাম না। তবে, একসময় ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবীদদের চাঁদা দিতো তখন থেকেই তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে চাঁদা দিয়ে লাভ নেই আমরাই রাজনীতিবীদ হয়ে যাই। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসায়ীক আইন, সমিতি নানান সুবিধা ভোগ করার জন্য রাজনীতিবীদদের কাজে লাগিয়েছে। বর্তমানে এ ব্যবসায়ীরাই তাদের সমিতির পক্ষ থেকে দাঁড়ায় যেমন বিজিএমের সমিতি এখানে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নেই। তারা তাদের গার্মেন্টেসের স্বার্থে কথা বলে তারা বিএনপি আওয়ামী লীগ বলে গালি দেয় না অর্থাৎ, তারা নিজেদেরে স্বার্থ দেখে। ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবীদের সম্পর্ককে অশুভ আঁতাত বলা ছাড়া উপায় নেই। ব্যাংকিং খাতের যে দুরাবস্থা সেটা রাষ্ট্র সুযোগ করে দিয়েছে। রাষ্ট্র যার হাতে থাকে সেই ক্ষমতাশীল। বিএনপি ১৫-১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকায় বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীদের জোর কমে আসছে। আব্দুল আওয়াল মিন্টুর মতো ব্যবসায়ীর হাত ধরে আওয়ামী লীগের সিকদার গ্রুপসহ আরো অনেক কোম্পানী সৃষ্টি করেন কিন্তু বর্তমানে ব্যবসা আগের মতো নেই।
বাংলাদেশের ইতিহাসে বিএনপি বিরোধী দলের উপর যে পরিমাণ চাপ গেছে তা অকল্পনীয়। বিএনপির একজন কর্মীর ৪০০টি মামলা, মহাসচিবের ১৮৭টি মামলা যার বেশিরভাগই অযৌক্তিক। পাকিস্তান আমল বলি বা তাজউদ্দিনের আমলে বালি তাদের নামে ৫০০ মামলা ছিলো এরকম আমরা শুনিনি। এমনকি এরশাদের আমলে ছাত্রনেতা থাকাকলীন এমন মামলার সংখ্যা শুনিনি। এমন কঠিন অবস্থানে থেকেও বিএনপি গ্যাস, জ্বালানি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি না করে কীভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে আনা যায় সে জন্য জনগণের পাশে থেকেছে আন্দোলন করেছে। কিন্তু আরো নিবিড়ভাবে, জনসম্পৃক্ততার সঙ্গে কর্মসূচী পালন করে জনগণের পাশে থাকা দরকার। এ ভারতকে আমি চিনি না। আমি চিনি ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদের ভারতকে, আমি চিনি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের ভারতকে, আমি চিনি নেতাজী সুভাস বসুর ভারতকে, জওহরলাল নেহরুর ভারতকে চিনি। যারা ভারতকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সংগ্রাম করেছে আমি তাদের চিনি সে ভারত আমার বন্ধু। মানতার প্রশ্নে বাংলাদেশেকে আক্রমণ করায় ইন্দিরা গান্ধী ভারত থেকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলো আমি এই ভারতকে চিনি কিন্তু যে ভারত বাংলাদেশের নাগরিকের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসে বিরোধী দলকে ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে এ ভারতকে আমি চিনি না। এ ভারত আমার বন্ধু না। ব্যবসায়ীরা সরকারি ব্যবসায়ীদের উপরে অবৈধভাবে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা এ সরকারকে সহযোগিতা করছে। এ চক্র থেকে সরকারের বের হয়ে আাসা সম্ভব না। ব্যবসায়ীদেরকে সুযোগ দিতেই হবে এবং সুযোগ দিয়েই জনগণকে নিষ্পেষিত করবে এবং এর ফলে আর্থিক খাত আরো ভেঙ্গে পরবে।
মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক : রাজনীতি করার জন্য যে কোনো মানুষের আয়ের উৎস থাকা চাই। হয় তাকে চাকরি করতে হবে নাহয় ব্যবসা করতে হবে। অর্থাৎ, ব্যবসা এবং রাজনীতিকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। কারণ, ব্যবসা এবং রাজনীতি একে অপরের পরিপূরক। এ সামান্য বিষয়কে যখন আমরা বুঝতে পারবো তখন আর আলোচনা সমালোচনা থাকবে না। জিনিসের দাম বাড়ায় জনগণের কষ্ট হচ্ছে তা অস্বীকার করছি না কিন্তু বাস্তবতা হলো ১০০ বছরে বিশ্ববাসী করোনা মহামারির ভুক্তভোগি। আমাদের দেশে মানুষের কাছে টাকা আছে, মানুষ একেবারে না খেয়ে থাকছে না কিন্তু তাদের কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে যে কেউ চাইলেই যে কোনো প্রান্ত থেকে লোকজন যাতায়াত করতে পারে। একজন কৃষকের জন্য ট্রেনের প্রয়োজন নেই চাইলে সে বাসের রুটে করে পণ্য আনতে পারে কিন্তু তা কৃষক করছে না। এটা তো আর সরকার করতে পারবে না তাকে তার নিজেরটা নিজেকেই করতে হবে। করোনার পর যখন আমরা ঘুরে দাঁড়াবো সে সময় রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পরে বিশ্ববাজারে। জ্বালানি তেলের দাম ৩০ এর নিচে নামার পর ১০০’র উপরে চলে গেছিলো সে ধাক্কাটাই আমাদের সামলে উঠটে সময় লেগেছে। সব দিক দিয়ে বিবেচনা করলে আমাদের দেশে খাদ্যপণ্যের দিক থেকে ৫ বা ৬ এর মাঝে থাকতাম আর এখন আমরা ১০ এর নিচে আছি।
শাহজাহানপুরে খলিল ৫৯৫ টাকায় একাই গরুর মাংস বিক্রি করায় তাকে যদি কেউ হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যারা এগিয়ে আসবে তাদেরকে সব রকরমরে সহায়তা দেওয়া হবে। কৃষি ব্যবসা ও খামারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ধরন আরেক রকম। তারা সংসদে বসে না। আমাদের দেশে যখন উৎপাদন বেশি হয় তখন সেগুলো পচে যায় এসব নিয়ে আলোচনা হয় অনেক কিন্তু আসল কথা নিয়ে কেউ তেমন আলোচনা করে না। এ ক্ষেত্রে রতন ভাইয়ের সঙ্গে একমত হয়ে বলতে পারি, কিছু ডেডিকেটেড ট্রেন হলে ভালো হতো। যারা খলিলের মতো দ্রব্যমূল্যের দাম সাশ্রয়ী বা কম দামে বিক্রি করে ব্যবসা করতে চায় তাদেরকে আমরা সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করবো। আর যারা দাম কমাচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ, তাদের থেকে টাকা বা জরিমানা আদায় করে কোনো লাভ হচ্ছে না। এছাড়াও ব্যবসায়ীদেরকে বুঝিয়ে আমরা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করানো হচ্ছে যেমন সিটি গ্রুপ, ফ্রেশ, মোস্তফা গ্রুপ এরা করছে। যেসব ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি দামে পণ্য বিক্রি করবে আমরা তাদেরকে কঠিন শাস্তির আয়তায় আনার ব্যবস্থা করবো।
সূত্র: ডিবিসি নিউজ। টকশো রাজকাহন।
ভিডিও কনটেন্ট থেকে শ্রুতিলিখন করেছেন রুদ্রাক্ষী আকরাম
