দিনাজপুরে মরিচের কেজি ১০ টাকা
দিনাজপুর প্রতিনিধি : [১] পাইকারি দোকান থেকে ১০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনছেন একজন খুচরা ব্যবসায়ী। পাইকারি দোকান থেকে ১০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনছেন একজন খুচরা ব্যবসায়ী।
[২] দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় পাইকারিতে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। তবে মরিচের দামের এমন অবনমনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা।
[৩] সোমবার সকালে বিরামপুর পৌর শহরের নতুনবাজার এলাকায় সবজির পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের (অনল-১৭০১ ও বিন্দু) কাঁচা মরিচ ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে দাম আরও কমতে থাকে। সর্বশেষ সকাল ১০টার দিকে পাইকারি বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে। [৪] জানা যায়, রোববারও বিরামপুরের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারে আসা অধিকাংশ কাঁচা মরিচই উপজেলার স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে কেনা বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান। দুই দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলি মাঠ থেকে পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচ আসছে। সে কারণে কাঁচা মরিচের দামে ভাটা পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। [৫] বিরামপুর নতুনবাজারে কাঁচা মরিচের পাইকারি ব্যবসায়ী নূর ইসলাম বলেন, এবার গ্রামে কৃষকদের জমিতে মরিচের উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ জন্য গতকাল রোববার সকাল থেকে বিরামপুরের পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহও বেড়েছে। রমজান মাসে কাঁচা মরিচের ক্রেতা কম। আবার বাজারেও কাঁচা মরিচের আমদানি বেশি। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৫০ টাকা পাল্লা (৫ কেজি) দরে বিক্রি করেছি। যেভাবে সরবরাহ বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে, কাঁচা মরিচের দাম আরও কমবে।
[৬] উপজেলার শৌলা গ্রামের বাসিন্দা সবজি ফেরিওয়ালা আহসান হাবীব (৬২) পৌর শহরের নতুনবাজার এলাকায় পাইকারি বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, গাঁয়ে গাঁয়ে ডালিত করে সবজি বেচো। পাইকারি বাজারোত থেকে ১০ ট্যাকা কেজিতে ৩ কেজি কাঁচা মরিচ কিনুচু। গাঁয়োত যায়ে এ্যালা মরিচ ২০ ট্যাকা কেজিতে বেচমু।
[৭] মরিচের এভাবে দাম পড়ে যাওয়ায় খরচের টাকা উঠলেও কোনো লাভ থাকবে না বলে জানান বিরামপুর উপজেলার পলিরামকৃষ্ণপুর গ্রামের মরিচচাষি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, এ বছর তিনি এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড (অনল-১৭০১) জাতের মরিচ আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে তার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এ জমি থেকে প্রায় ৬০ মণ মরিচ উঠবে। বাজারে কাঁচা মরিচের যে দাম চলছে, তাতে হয়তো জমির সব মরিচ বিক্রি করে কোনোমতে খরচের টাকাটা উঠবে, কিন্তু লাভ হবে না। যারা মরিচ ও শাকসবজি আবাদের আয়ের টাকায় সংসার চালান, তাদের জন্য এমন দাম পাওয়াটা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন এই কৃষক।
[৮] গত খরিপ-১ মৌসুমে বিরামপুর উপজেলায় ৪৮ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল জানিয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে। সেসব মরিচ এখন বাজারে উঠছে। চলতি রবি মৌসুমে ৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।