
ডিএসইতে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে

মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজাওে টানা দরপতন চলছেই। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেনের খরা। গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে তিন’শ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। [২] এর আগে গত সপ্তাহ লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই মূল্যসূচক কিছুটা বাড়ে। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার ও তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার এসে আবারও দরপতন হয়। [৩] এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজার মন্দার মধ্যে রয়েছে। তবে মাঝে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখে গেলেও সার্বিকভাবে বাজার পতনের মধ্যে রয়েছে। অধিকাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। বরং দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। [৪] এবিষয়ে বিনিয়োগকারী জামান বলেন, আর কয়েকদিন বাদে ঈদ এখন যদি বাজার ভালো না হয়। ঈদ কিভাবে করবো আমরা বিনিয়োগকারীরা। গত আড়াই মাস ধরে দরপতনে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছি। []৫] গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার ধারা অব্যাহত থাকায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৬ পয়েন্ট কমে যায়। তবে শেষদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় পতনের মাত্রা কিছুটা কমে আসে। [৬] দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৭৯টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচক কমার [৭] পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমে তিন’শ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৬৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৬৮ কোটি ৮২ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকসের ১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালেক স্পিনিং।
[৮] এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিস, এমারেল্ড অয়েল, বেস্ট হোল্ডিং, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডেন সন, ফরচুন সুজ এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
[৯] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
