ব্রাজিলে তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চায় বাংলাদেশ দাম কম হওয়ায় ব্রাজিল থেকে কোরবানীর গরু আনার প্রস্তাব
সোহেল রহমান : [১] ব্রাজিলে তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া সহজে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ওষুধ রপ্তানি এবং পাট ও চামড়াজাত পণ্যের প্রবেশাধিকারও চাওয়া হয়েছে।
[২] রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রোববার বিকেলে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা-এর সঙ্গে বৈঠককালে এসব অনুরোধ জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
[৩] বৈঠক শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এটা ব্রাজিল থেকে ফরেন মিনিস্ট্রি লেভেলে প্রথম ভিজিট। আমাদের স্বাধীনতার ৫২ বছরে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে আসলেন। তারা ট্রেড এবং কমার্সকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সে কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও এসেছে। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মূলত আলোচনা করেছি যে, আমাদের দেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারটা চাই। ওদের থেকে যে সূতাটা আমরা নিয়ে আসছি সেই সূতায় তৈরি পোশাকটা যেন আমরা শুল্কমুক্ত বা কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাই।
[৪] বাংলাদেশের প্রস্তাবের বিষয়ে ব্রাজিলের অবস্থানের বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিল একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। তারাও নিজেদের শিল্পকে সুরক্ষা দিতে পোশাক খাতে কিছু বিধি-নিষেধ রেখেছে। তারা শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও চীন থেকে তৈরি পোশাক নেয়। বাকিটা তারা নিজেরা তৈরির চেষ্টা করে। তারা কথা দিয়েছেÑ শুধুমাত্র ব্রাজিল নয়, বাংলাদেশের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টটা যেন পুরো অঞ্চলের জন্য হয়, সেজন্য তারা আমাদের সহায়তা করবে। আর আমাদের টার্গেট শুধু ব্রাজিল নয়, দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দেশগুলোও। আমরা বলছি, শুধু বাংলাদেশের মার্কেট না, বাংলাদেশে এটিকে প্রসেস করে এশিয়ান মার্কেটে এন্টার করার বিষয়টি তাদের বলেছি। আমরা সাউথ এশিয়ান হাব মনে করে যেন কাজে লাগাতে পারে।
[৫] ব্রাজিলে ওষুধ রপ্তানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের বলেছে তাদের পক্ষ থেকে কোনো অসুবিধা নেই, তবে তাদের কিছু লাইসেন্সিং প্রসেস আছে। আন্তর্জাতিক রেজিস্ট্রেশন আছে। আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেট যেন সহজেই ওই দেশে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে সেখানে এক্সপোর্ট করতে পারে এবং সেই সঙ্গে জুট, লেদার গুডস কীভাবে মার্কেট অ্যাকসেস হয় সেগুলো নিয়েও কথা হয়েছে।
[৬] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আগামী কোরবানির ঈদের আগে ব্রাজিল থেকে গরু আনা যায় কি না সে বিষয়ে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সাক্ষাতে ব্রাজিলের পক্ষ থেকে অ্যানিমেল প্রোটিনটা ফোকাসে ছিল। বিশেষ করে ব্রাজিলে গরু দামে সস্তা এবং তারা অত্যন্ত কম দামে মাংস রপ্তানি করে।
[৭] গরুর মাংসের দাম প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি নাÑ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দামের বিষয়গুলো নিয়ে এখনো কোনো কথা হয়নি। আগে আমদানি অ্যালাউ করি তখন দাম ও হেলথ সার্টিফিকেশন নিয়ে আলাপ হবে। আমাদের এখনো অ্যানিমেল প্রোটিন আমদানি নিষিদ্ধ। আমরা পোল্ট্রি এবং মাংস ইম্পোর্ট করি না। আমরা আগে স্টাডি করে নিই, তারপর দেখা যাবে কোনো দামে এটি আসতে পারে।
[৮] বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছে যে আমাদের এ জয়েন্ট ডায়ালগটা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তাদের বাণিজ্যসচিবও সাক্ষাতে ছিলেন। আশা করছি, জুলাইয়ে তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে এর মধ্যে আমরা কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে পারবো।